সাংবাদিকদের তোপের মুখে ডিএনসির ডিজি, দুর্নীতির দায় অস্বীকার

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-10-07 14:01:10

একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে সাংবাদিকদের তোপের মুখে পড়েছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) বর্তমান মহাপরিচালক (ডিজি) খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান। সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিএনসির সদরদপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এসে দুর্নীতির বিষয়ে সাংবাদিকদের একের পর এক প্রশ্নের সম্মুখীন হন তিনি।

তবে তার বিরুদ্ধে আনীত এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।

দুই জেলার ডিসির দায়িত্ব পালনের সময়ে বেশ কিছু দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আপনার বিরুদ্ধে। এছাড়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও আপনার বিরুদ্ধে নানা সময় অভিযোগ করে আসছে। এমন প্রশ্ন করা হলে মাদকের বর্তমান ডিজি বলেন, আমি আগে যেসব জায়গায় কাজ করেছি বা দায়িত্ব পালন করেছি সেসব জায়গায় আমার বিরুদ্ধে বিন্দু পরিমাণ দুর্নীতির কোনো অভিযোগ নেই। কেউ বলতে পারবে না আমি ঐসব জায়গায় দুর্নীতি করেছি। আমি যেসব জায়গায় কাজ করেছি সেসব জায়গায় আমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করি।

আপনি মাদকের আগে যেসব জায়গায় দায়িত্ব পালন করেছিলেন সেসব জায়গায় সাংবাদিক প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা আমি এই ধরনের কোন নিষেধাজ্ঞা দেইনি।

রাজউকের কাছ থেকে একটি ও গৃহায়নের কাছ থেকে একটি প্লট নেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চাইলে ডিজি বলেন, আমি এই প্লট গুলো অনিয়ম করে নেইনি। নিয়মের মধ্য থেকেই নিয়েছি। আমি সরকারি নিয়ম নীতি মেনে প্লটের জন্য আবেদন করেছি।

একজন দুইটি প্লট পায় কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে মাদকের মহাপরিচালক ফের নিয়মেরর কথা উল্লেখ করেন।

অনেক সময় দেখা যায় অভিযানে প্রাপ্ত মাদকের সংখ্যা আর্থিক লেনদেনের বিনিময়ে কমিয়ে দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। এই ধরনের কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মাদকের মহাপরিচালক বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর এ সংক্রান্ত চারটি অভিযোগ আমি পেয়েছি। পরে এই সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করেছি। কমিটি তদন্ত করছে এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে। কুষ্টিয়াতে এমন অভিযোগ পেয়ে সেটি আমরা তদন্ত করি এবং সত্যতা পাওয়ায় ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করি।

গুলশান সার্কেলের মাদকের পরিদর্শক সুমন রহমানের দুর্নীতি ও করনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অধিদপ্তর কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে উল্টো তাকে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে মানিকগঞ্জে। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মাদকের মহাপরিচালক বলেন, গুলশান থেকে মানিকগঞ্জ এটা কি ভালো পোস্টিং হয়েছে‌। তার বিরুদ্ধে আমরা তদন্ত করছি। পোস্টিং কোনো শাস্তি না।

রাজধানী ঢাকায় দেখা গেছে বৈধবারের তুলনায় অবৈধ বার বেশি এ বিষয়ে মাদকের কোনো ধরনের কার্যক্রম আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেউ অবৈধভাবে মাদক বিক্রি করতে পারবে না, এ বিষয়ে আমরা সবসময় কাজ করি।

তিনি আরও বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ৫ হাজার ২৬৪টি অভিযান পরিচালনা করে ১ হাজার ১৯৮টি মামলা দায়ের পূর্বক ১ হাজার ২৯৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে করেছে। গ্রেফতারদের মধ্যে ১১ জন গডফাদারসহ ৮৯ জন শীর্ষ মাদক কারবারি রয়েছেন।

তিনি বলেন, অভিযান পরিচালনাকালীন সময়ে ৩,০৯,১০১ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৩.৭৬০ কেজি হেরোইন, ১.১ কেজি আইস, ৩৭৭৪ বোতল ফেন্সিডিল, ২৪১৬ বোতল বিভিন্ন ব্রান্ডের বিলাতি মদ, বিয়ার- ২৪১৬ ক্যান, টাপেন্টাডল ট্যাবলেট -৫৭৯১ পিস, চোলাই মদ ১৩৮০ লিটার, ৬৬৪.২ কেজি গাঁজা, ইনজেকশন ৪২২২ এমপুল, শটগান-০১ টি, গুলি ৫১ রাউন্ড, বিভিন্ন যানবাহন- ০৯টি এবং ২১ লাখ ১১ হাজার ৭৮০ টাকা উদ্ধার ও জব্দ করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর