পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়া ও স্রোতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ভাঙন দেখা দিয়েছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সীবাজার, দেবগ্রাম ও কাওয়ালজানি গ্রাম। ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের। এরই মধ্যে নিরাপত্তার কথা ভেবে অনেকেই নিজেদের বসত ঘর সরিয়ে নিচ্ছে অন্যত্র। গত ৪ থেকে ৫ দিন ধরে তীব্র ভাঙনের শিকার পদ্মাপাড়ের এ সকল মানুষ।
নদী ভাঙন প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসন কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। নদী ভাঙন প্রতিরোধে স্থানীয় বন্দোবস্তের দাবিতে মানববন্ধনও করেছে এলাকাবাসী। সোমবার (৭ অক্টোবর) দেবগ্রামের মুন্সী বাজার এলাকা ও কাউলজানি এলাকার ভাঙন স্থানে দাঁড়িয়ে অত্র এলাকার সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন কয়েশ'ত নারী, পুরুষ, শিশু, শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
এসময় তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নদী ভাঙন রোধে কোন ব্যবস্থা না নিলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধের আলটিমেটাম দেন।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা দাবি করেন, ভাঙনে ইতিমধ্যে দুটি বসতভিটা ও ৫০ একর কৃষিজমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সোমবার পর্যন্ত ৪টি পরিবারের ১০টি ঘর ভেঙে অন্যত্র সরে গেছে। ভাঙন আতঙ্কে রাতে ঘুমাতে পারছেন না পদ্মাপাড়ের মানুষেরা। কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের পদক্ষেপ না নেওয়ায় শত শত বিঘা আবাদি ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এরকম চলতে থাকলে মানচিত্র থেকে দেবগ্রামের নাম মুছে যাবে।
প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তারা বলেন, নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে প্রতি বছর তারা ভাঙনের শিকার হন। স্থায়ীভাবে নদী শাসন ও অবৈধভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনসহ প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করার ঘোষণা দেন মানববন্ধন থেকে।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী এম.এ.শামীম জানান, তারা ভাঙন কবলিত জায়গা পরিদর্শন করেছেন। ভাঙনের বিষয়টি তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ তাদের যেভাবে নির্দেশনা দিবে তারা পরবর্তীতে সেভাবে কাজ করবে।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, গত ৪-৫ দিন ধরে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে দেবগ্রাম ও কাওয়ালজানির প্রায় এক থেকে দেড় কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও জেলা প্রশাসককে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন।