অবৈধ ও দুর্ঘটনাপ্রবণ সিএনজি (গ্যাস) পাচার রোধ করে ২৪ ঘণ্টা নিরিবচ্ছিন্নভাবে সিএনজি (গ্যাস) সরবরাহের দাবি জানিয়েছে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক সমিতি।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার পেট্রোবাংলার সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে এই দাবি জানানো হয়। বাঁচাও রাইড পরিষেবা ঐক্য পরিষদ এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক এক্য পরিষদ ব্যানারে বিক্ষোভ কর্মসূচিটি অনুষ্ঠিত হয়।
আন্দোলনকারীরা বলেন, আমাদের দিনে দুইবার সিএনজি স্টেশন থেকে গ্যাস আনতে হয়। প্রতিবার গ্যাস আনতে গিয়ে তিন ঘণ্টা, তিন ঘণ্টা মোট ৬ ঘণ্টা লাইনে পরে থাকতে হয়। তারপরেও অনেক সময় আমরা গ্যাস পাইনা। পেলেও গ্যাসের চাপ থাকেনা অর্ধেক গ্যাসও নিতে পারি না আমরা।
তারা বলেন, আমরা যদি দিনের ৬ ঘণ্টা গ্যসের জন্য লাইনেই দাড়িয়ে থাকি। তাহলে ভাড়া খাটবো কখন আর টাকা রোজগার করবো কিভাবে? এভাবে আমরা কিভাবে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকবো? একটা সিএনজি রাস্তায় নামাতে আমাদের ৩০ লাখ টাকা খরচ হয়। অথচ একটা প্রাইভেট ১২/১৪ লাখ টাকা হলেই পাওয়া যায়।
তারা বলেন, আমরা যদি ধরি ঘণ্টায় ৩০০ টাকা আমাদের ইনকাম হয়। তাহলে দিনে ৬ ঘণ্টা গ্যাসের জন্য সময় দিয়ে আমাদের প্রত্যেকের কমপক্ষে ১৮শ' টাকা ক্ষতি হয়। এই টাকা হলে আমাদের প্রত্যেকটা পরিবার ভালোভাবে চলতে পারে। তাই আমাদের দাবি একটাই অবৈধ ও দুর্ঘটনাপ্রবণ সিএনজি (গ্যাস) পাচার রোধ করে সঠিক পরিমাপে ২৪ ঘণ্টা সিএনজি ফিলিং স্টেশন খোলা রেখে নিরিবচ্ছিন্নভাবে সিএনজি (গ্যাস) সরবরাহ করতে হবে।
এদিকে পেট্রোবাংলার চায়ারম্যান বরাবর পেশ করা লিখিত স্মারকলিপিতে তারা জানান, গত দুই যুগ ধরে পরিবহন খাতে উল্লেখযোগ্য যানবাহনে দেশের তুলনামূলক সাশ্রয়ী জ্বালানী হিসেবে সিএনজি (গ্যাস) এর ব্যবহার ব্যাপকভাবে জ্বালানী খাতের চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু, এটা খুবই দুঃখজনক যে, গত ছয় মাসের বেশি সময় ধরে এই সিএনজি প্রাপ্তিতে সৃষ্টি হয়েছে চরম ভোগান্তি। এতে একদিকে যেমন প্রতিটি বাহনকে এক কিংবা দু'বারের স্থলে প্রতিদিন ২ অথবা ৩ বার সিএনজি রিফিল করার জন্য যেতে হচ্ছে ফিলিং স্টেশনে অন্যদিকে প্রতিবারে দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় ব্যয় করে যে পরিমাণ গ্যাস পাচ্ছে তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। এমনকি দীর্ঘ সময় লাইনে দাড়িয়ে অপেক্ষা করে গ্যাস নিতে গিয়ে উল্টো উক্ত যানবাহনে পূর্বের রিজার্ভকৃত গ্যাসের একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গ্যাস শুধুমাত্র সিস্টেমগত ত্রুটির কারণে অযথা অপচয় হচ্ছে।
অনতিবিলম্বে দুর্ঘটনা প্রবণ অবৈধ পন্থায় সিএনজি পাচার বন্ধ করলে এবং ২৪ ঘণ্টা সিএনজি স্টেশন খোলা রেখে নিরিবচ্ছিন্নভাবে অনুমোদিত যানবাহন গুলোতে এই জ্বালানি সরবরাহ করলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হবে। আমরা আশা করি বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং একই সাথে সংশ্লিষ্ট দপ্তর কর্তৃক শ্রমিক ও জনদুর্ভোগ সম্বলিত এই সমস্যা সমাধানে আন্তরিক ভূমিকা পালন করবেন।