প্রেমের টানে ফিলিপাইনের দুই তরুণী রাজশাহীতে

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী | 2024-10-08 16:51:19

দেশ, ভাষা ও সংস্কৃতির ভিন্নতাকে অতিক্রম করে ভালোবাসার টানে ফিলিপাইন ছেড়ে বাংলাদেশের সবুজ নগরী রাজশাহীতে এসে সংসার শুরু করেছেন দুই তরুণী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাদের পরিচয় হয় এবং ধীরে ধীরে তা গড়ায় প্রেমে। তারা এখন নতুন জীবন শুরু করেছেন।

জানা গেছে, তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের রাকিবুল ইসলামের ফেসবুকে পরিচয় হয় ফিলিপাইনের জাম্বোয়াঙ্গা উপদ্বীপ অঞ্চলের খাদিজা ইসলামের সঙ্গে। তখন খাদিজা সৌদি আরবে কর্মরত ছিলেন এবং তার পুরোনো নাম ছিল রিজেল ক্লিয়ার। ধীরে ধীরে এই পরিচয় প্রেমে রূপ নেয়। ৫ অক্টোবর খাদিজা সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে এসে পৌঁছান এবং ৬ অক্টোবর তারা পরিবারের সম্মতিতে মুসলিম রীতিতে বিয়ে করেন। বর্তমানে তারা রাকিবুলের নিজ গ্রামে বসবাস করছেন।

এদিকে তানোর উপজেলার মালশিরা গ্রামের রেজাউল করিমের সঙ্গে ফিলিপাইনের নেগ্রোস দ্বীপের বাগো শহরের চারিনা মলিনের ফেসবুকে পরিচয় হয়। সিঙ্গাপুরে একসঙ্গে কাজ করার সুবাদে তাদের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে, যা পরে প্রেমে রূপ নেয়। তিন মাস আগে চারিনা বাংলাদেশে এসে মরিয়ম খাতুন নামে ধর্মান্তরিত হয়ে রেজাউলকে বিয়ে করেন। বর্তমানে তারা রেজাউলের নিজ গ্রামেই সংসার করছেন।

প্রেমের এই দুই গল্প এখন গ্রামবাসীর আলোচনার বিষয়। রাকিবুল-খাদিজা এবং রেজাউল-মরিয়ম, এই দুই দম্পতিই জানান, ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হওয়ার সময় তারা ভাষার বাধা অতিক্রম করেছেন। তারা ইংরেজিতে বাংলা ও ফিলিপাইনের ভাষায় অনুবাদ করে চ্যাটিং করতেন। এভাবে তাদের বন্ধুত্ব এবং পরে ভালোবাসা গড়ে ওঠে।

দুই দম্পতির পরিবারের সবাই তাদের বিয়েতে সম্মতি দিয়েছে। তবে ভৌগলিক দূরত্বের কারণে বিয়ের প্রস্তুতিতে কিছুটা সময় লেগেছে। প্রথমে মরিয়ম বাংলাদেশে আসেন তিন মাস আগে এবং ৫ অক্টোবর খাদিজা সৌদি আরব থেকে আসেন। তারা মুসলিম রীতিতে বিয়ে করে স্বামীদের সঙ্গে সুখে সংসার করছেন।

এই ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর আশপাশের গ্রামের মানুষের মাঝে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন মানুষ ভিনদেশি বধূদের দেখতে আসছেন।

তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, প্রতিদিন গ্রামবাসী নব দম্পতিদের বাড়িতে এসে তাদের দেখতে চাইছেন। যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য থানা পুলিশ নজর রাখছে।

তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনহাজুল ইসলাম জানান, দুই তরুণী ফিলিপাইন নাগরিক হওয়ায় তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। বিদেশি নাগরিকদের জন্য যেন কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয়, সে জন্য থানা পুলিশকে নজর রাখতে বলা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনও এ বিষয়ে খোঁজখবর রাখছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর