কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে লাল্টু গ্রুপের হামলায় ১০ জন আহত হয়েছে। এসময় মোটরসাইকেল ভাঙচুর, বসতবাড়িতে হামলা, গবাদিপশুসহ বাড়ীঘরের মালামাল লুটপাটের ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কুমারখালি উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের বাঁধবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব এবং আধিপত্য বিস্তারে বিধ্বস্ত কুমারখালির পাহাড়পুর গ্রামের জনজীবন। এই এলাকার মন্ডল গ্রুপের আমিরুল ইসলাম মারা যাওয়ার পর লাল্টু নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সজীব ও মোমিনসহ তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা মিলে এলাকায় অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাজারে একটি দোকান লিজ নেওয়াকে কেন্দ্র করে শালিসি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। এসব বিষয় নিয়ে বাঁধবাজার কমিটির নেতাদের সাথে কথা বলতে গেলে লাল্টুর নেতৃত্বে লাল্টু,সজিব, মমিন,মাসুদ, আমিরুল, সজল, মতিয়ার, আতিয়ার, এনামুল, নান্নু, ওসমান দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে বাঁধবাজার এলাকার তালেব বিশ্বাসের ছেলে রিয়াজ আলী (৪২), হাকিম বিশ্বাসের ছেলে রফিক বিশ্বাস (৪৩) একই এলাকার গফফারের ছেলে তারিকুল ইসলাম, নাজিম বিশ্বাসের রাজন, মৃত: সাজ্জাদ আলী শেখের ছেলে মুক্তার হোসেনসহ অন্তত আটজন আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
পরে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
রাতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রফিক বিশ্বাসের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, রাজমিস্ত্রীর কাজ শেষ করে বাড়ী ফিরছিলাম। এসময় বাজারের একটা লীজকৃত দোকান নিয়ে আজকে শালিসি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৈঠকের আগেই লাল্টু তার দলবল নিয়ে হামলা চালিয়ে জখম করে। পরে লাল্টু তার লোকজন নিয়ে আমাদের ঘরবাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। আমরা এই ঘটনার সঠিক বিচার চাই।’
তুষার নামের স্থানীয় একজন বলেন, ‘লাল্টু এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতে এই হামলা চালিয়েছে। হামলার পর আমার বাড়ী থেকে দুইটা ল্যাপটপ ও একটা কম্পিউটার এবং তিনটা ছাগল লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়াও তারিকুলের গোয়ালঘর থেকে আড়াই লাখ টাকার গরু লুট করে যায়। এছাড়াও জাফরের ছেলে সজলের পালসার মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। লাল্টুর কারনে এলাকায় অশান্তি। আমরা এলাকায় শান্তি চাই। কোনো সংঘাত বা মারামারি চাই না।’ এরআগেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগ করেও কোন সুফল পায়নি।
কুমারখালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাধবাজারে দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয় দলাদলি, আধিপত্য ও জায়গাজমি নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধ ছিল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাজারে স্থানীয়দের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়েছি। একপর্যায়ে মারামারিতে রুপ নেয়। তিনজনের বাড়ী থেকে গবাদিপশু নিয়ে গেছে। কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখনো থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী সময়ে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।