চুয়াডাঙ্গায় ওয়ার্ড বিএনপির নেতাসহ ৭ জনকে কুপিয়ে জখমের ঘটনা ঘটেছে। পরিবারের সদস্যরা আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের ভাণ্ডারদহ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- ওই এলাকার মৃত সুবারদ্দী শেখের ছেলে ইমাতউল্লাহ শেখ (৪৫), আমির হোসেনের ছেলে মুক্তার আলী (৬০), তার স্ত্রী মিস্রি খাতুন (৪৭), ছেলে মারুফ হোসেন (৩০), আবুল মণ্ডলের ছেলে বসির আলী (৩৫), আইয়ুব আলীর ছেলে এশার আলী (৪৫) ও তোফাজ্জেলের ছেলে আকালে মণ্ডর (৫৫)।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আহতদের স্বজন মৃত লাণ্টুর ছেলে তেঁতুল শেখ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র তানজিল হোসেন গত ১৮ জুলাই সরোজগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন। তার প্রতিবেশী ও ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার সুজন মিয়া বিষয়টি নিয়ে তানজিলের ওপর ক্ষুদ্ধ ছিলেন। ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়ায় গত ২০ জুলাই রাতে তানজিলকে মারধরের চেষ্টা করেন মেম্বার সুজন মিয়া।
কলেজছাত্র তানজিল হোসেন জানান, ‘আমার পরিবারের সবাই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সুজন মিয়া আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে ২০ জুলাই আমাকে মারধরের চেষ্টা করে। ওনার ভয়ে আমি এক সপ্তাহ পালিয়ে থাকতেও বাধ্য হয়েছি। ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়ায় সে আমাকে ভয়-ভীতি দেখাতো। মঙ্গলবার রাতে তার সাথে আমার দেখা হলে তিনি আমার সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান। প্রতিবাদ করলে আমাকে আঘাত করেন। পরে আমার পরিবারের সদস্যরা মেম্বারের কাছে আমাকে মারধরের কারণ জানতে গেলে মেম্বার সুজনসহ তার পরিবারের ৮-১০ জন আমাদের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। আমরা সম্পূর্ণ নিরস্ত্র ছিলাম। ওরা দা, চাইনিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন অস্ত্র দিয়ে আমার পরিবারের ৭ জনকে কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোরশেদ আলম বলেন, ‘রাত সাড়ে ১০টার পরে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় নারীসহ ৭ জন জরুরি বিভাগে আসেন। প্রত্যেকের শরীরে রক্তাক্ত ও ধাতব অস্ত্রের জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে এনাতউল্লাহর মাথার জখম গুরুতর। অন্যরা শঙ্কামুক্ত। জরুরি বিভাগ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের ভর্তি রাখা হয়েছে।’
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, সদর থানাধীন ভাণ্ডারদহে একটি মারামারির ঘটনায় সাতজন আহত হয়েছে বলে জেনেছি। আহদের পক্ষে থানায় অভিযোগের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছে এবং সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক। অভিযোগ প্রাপ্তির পর তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।