ভেপিং পণ্য নিষিদ্ধ নয়, আইন সংশোধনের মাধ্যমে বহাল রাখার দাবি

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম | 2024-10-24 14:40:40

বাংলাদেশে ভেপিং পণ্য নিষিদ্ধ না করে ধূমপান ও তামাক আইন সংশোধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটির বহাল রাখার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন (বেন্ডস্টা) এবং ভেপ ব্যবহারকারীদের একাধিক সংগঠন।

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউরি সিজেকেএস ভবনের নিচে 'আইন সংশোধনে বৈষম্য নয়, অংশীদারিত্ব চাই' প্রতিপাদ্যে আয়োজিত এক মানববন্ধন তারা এই দাবি জানান।

মানববন্ধনে বেন্ডস্টার প্রতিনিধি আজহার রাব্বি চৌধুরী ইভান, কোরসার প্রতিনিধি মো. কামরুজ্জামানসহ ভেপিং এর ভোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কোরসার প্রতিনিধি মো. কামরুজ্জামান বলেন, তামাক ও ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারের প্রচেষ্টাকে আমরা সমর্থন করি। তবে তা যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত হওয়া উচিত। খাতসংশ্লিষ্ট ও অংশীজনদের বাদ দিয়ে আইনের সংশোধনের বিষয়টি বৈষম্যমূলক। ভেপিং নিয়ে জনমনে অনেক ভুল ধারণা আছে। ই-সিগারেট ও ভেপকে প্রচলিত সিগারেটের সাথে মেলানো ঠিক না। ভেপিং পণ্যে টার নেই, যা সিগারেট পোড়ানোর মাধ্যমে তৈরি হওয়া সবচেয়ে ক্ষতিকর পদার্থ। ফলে এগুলো অনেক কম ক্ষতিকর।

আজহার রাব্বি চৌধুরী ইভান বলেন, ইউকে হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি নিশ্চিত করেছে যে ভেপিং ধূমপানের তুলনায় ৯৫ শতাংশ কম ক্ষতিকর এবং যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, নিউজিল্যান্ড এবং সুইডেন জন স্বাস্থ্যনীতির অংশ হিসেবে এর ব্যবহারকে উৎসাহিত করছে। সুইডেনে ধূমপানের হার ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। এর প্রধান কারণ, দেশটির নীতি তামাক ক্ষতি হ্রাসকারী পণ্যগুলোর ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশ ভেপিং নিষিদ্ধ করেছে, কিন্তু অবৈধ পথে এর ব্যবহার এখনও প্রচলিত রয়েছে। এই পণ্যগুলো নিষিদ্ধ করার পরিবর্তে, আমাদের উচিত যৌক্তিক নিয়মকানুন প্রয়োগ করা, যা প্রচলিত ধূমপানের ব্যবহার কমাতে ও সরকারের জনস্বাস্থ্য লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হতে পারে।

মানববন্ধনে বক্তারা জানান, অংশীজন ও খাতসংশ্লিষ্টদের বাদ দিয়ে কেবল এনজিওদের পরামর্শে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংশোধনীর খসড়াটি তৈরি করে। ২০২২ সালে তা অনলাইনে উন্মুক্ত করে মতামত দেওয়ার জন্য স্বল্প সময় বেধে দেওয়া হয়। যা ছিল স্রেফ একটি প্রহসন। অংশীজনদের মতামতের অভাব থাকায় ও অধিকতর যাচাই বাছাইয়ের জন্য গত বছর (২০২৩) মন্ত্রিসভা থেকে ফেরত পাঠানো হয় খসড়াটি। আওয়ামী লীগের আমলের প্রহসনের ও বৈষম্যমূলক সেই খসড়াটি আমলে নিয়েছে এই অন্তবর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও। এবারও অংশীজনদের উপেক্ষার বিষয়টি বিস্ময়কর!

বক্তারা আরও বলেন, এ ব্যবসার সাথে অনেক মানুষ জড়িত। পাশাপাশি ৫ লাখ ব্যবহারকারী আছেন, যারা ভেপিং এর মাধ্যমে ধূমপান ছেড়েছেন। সংশোধনীর মাধ্যমে করা উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এসব মানুষ। অংশীজন ও খাতসংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করলে বিষয়টির একটি সুরাহা করা সম্ভব বলে আমরা মনে করি। ছাত্র-জনতার সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বৈষম্য দূর করার অঙ্গীকার নিয়ে এ সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা মনে করি এ সরকার জনগণের সরকার। এ সরকার আমা কথা শুনবেন।

সংগঠনটিগুলোর দাবি, আইনটি সংশোধনে অদূরদর্শী ও তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত গ্রহণ কোনো সুফল বয়ে আনবে না। বরং তা যেন সরকারের জনস্বাস্থ্য লক্ষ্য ও রাজস্ব অর্জনের প্রয়াসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় তা নিশ্চিত করতে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ প্রয়োজন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর