চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম ফজলুল্লাহকে অপসারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে সংস্থাটিতে এই কর্মকর্তার ১৪ বছরের ‘শাসনের’ অবসান হলো।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার বিভাগ পাস-২ শাখার উপসচিব মো. আব্দুর রহমানের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে ফজলুল্লাহর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের পাশাপাশি অপসারণের কথা জানানো হয়। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর)।
একই প্রজ্ঞাপনে সংস্থাটির দৈনন্দিন কার্যক্রম সুচারুভাবে পরিচালনা এবং চলমান উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় সরকার, চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালককে তার নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে সাময়িকভাবে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়ার কথা জানানো হয়।
১৯৪২ সালে জন্ম নেওয়া এ কে এম ফজলুল্লাহ চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে অবসর নেন ২০০০ সালে। এর ৯ বছরের মাথায় আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ৬ জুলাই প্রথমবার চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে এক বছরের জন্য নিয়োগ পান তিনি। এরপর আরও এক বছর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালে ঢাকা ওয়াসার আদলে চট্টগ্রাম ওয়াসাতেও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ তৈরি করা হয়। ওয়াসা বোর্ডও পুনর্গঠন করা হয়। তখন এমডি পদে নিয়োগ পান তৎকালীন চেয়ারম্যান এ কে এম ফজলুল্লাহ। সেই থেকে এমডি পদে বারবার পুনরায় নিয়োগ পেয়ে এসেছেন তিনি।
দীর্ঘ শাসনামলে ফজলুল্লাহ বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠে। তার আমলে পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশনের জন্য একের পর এক প্রকল্প নেওয়া হলেও কোনোটিই তিনি নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে পারেননি। প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়েছে দফায় দফায়। আবার পানি চুরি, বছর বছর দাম বাড়ানো, অপচয় কমাতে না পারা, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির অভিযোগ আসায় বারবার সমালোচিত হন আওয়ামী লীগ–ঘনিষ্ঠ ৮২ বছর বয়সী এই প্রকৌশলী। কিন্তু ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও ‘ক্ষমতার জোরে’ টিকে থাকেন ফজলুল্লাহ। তার পদত্যাগের দাবিতে দফায় দফায় আন্দোলন হলেও তিনি সরে যাননি। অবশেষে সরকারই তাকে সরিয়ে দিল।