নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার সারাদেশের সিটি কর্পোরেশন ও পৌর সভার অপসারণকৃত কাউন্সিলরদের পুনর্বহালের দাবি জানানো হয়েছে। কাউন্সিলরদেরকে পুনর্বহাল করা না হলে ধরে নিতে হবে, আমাদের আমলা এবং অন্তবর্তী সরকার ফ্যাসিবাদী এবং 'র'-এর এজেন্টদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।
সোমবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের অডিটরিয়ামে কাউন্সিলর সমাবেশে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ সিটি কর্পোরেশন কাউন্সিলর এ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
বক্তারা বলেন, কাউন্সিলররা নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে রাত দিন পরিশ্রম করে আসছে। তারা সকল প্রকার নাগরিক সেবা প্রদান করে আসছে। সরকারের যাবতীয় সেবামূলক কাজগুলো পরিচালনার পাশাপাশি ওএমএস, টিসিবি, বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, শিশুভাতা, সকল প্রকার টাকা কার্যক্রম ও সরকারী নির্দেশ অনুযায়ী সকল প্রকার সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা, সিডিসি, প্রেসক্লাব, রুপান্তর, ওয়ার্ড ভিশন, আশ্রয় ফাউন্ডেশন ও ব্রাকসহ বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রম পরিচালনসহ দলমত নির্বিশেষে সকলের জন্য সেবা দিয়ে থাকেন।
তারা আরও বলেন, কাউন্সিলরদের অপাসারণের পর থেকে নাগরিক সেবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে এবং প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট হয়েছে। যার ফলে ওয়ার্ডবাসী নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন যাপন করছে। ওয়ার্ডবাসী তাদের চাহিদা অনুযায়ী নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যার ফলে সরকারের ভাবমূর্তি নগরবাসীর কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আমরা এই সরকারের সফলতা দেখতে চাই। এই সরকারের ভাবমূর্তি ব্যর্থতা দেখতে চাই না। তাই সরকারের কার্যক্রমকে আরো গতিশীল কার্যক্রম করার জন্য অপসারণকৃত কাউন্সিলরদের পুনরায় বহাল করে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কাউন্সিলররা স্থানীয়ভাবে সেবা দিলেও এমপির সঙ্গে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। স্থানীয় সরকারের শাসন বিভাগের একমাত্র নির্বাচিত প্রতিনিধি হচ্ছে কাউন্সিলররা। তাদের পরিচয় তারা নিজেরা তৈরি করতে পারে নাই। ফলে কাউন্সিলররা পদে পদে লাঞ্ছিত হচ্ছে। সচিব, এমপি,মন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির চারিত্রিক সনদ ইস্যু করে কাউন্সিলররা তাছাড়া জন্ম, মৃত্যুসহ সকল নিবন্ধন কাউন্সিলর কাছ থেকে নিতে হয়। তাই কাউন্সিলররা নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। তারা বুঝতে হবে এমপি তাদের বড় ভাই না। কাউন্সিলররা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পারে নাই বলে বিভিন্ন সরকার তাদের তাচ্ছিল্য করছে। দেশের স্থানীয় সরকার যত শক্তিশালী, সেই দেশ তত উন্নত। তাই বিদেশীরা আসলে তারা সিটি কর্পোরেশন ও ইউনিয়ন পরিষদের কাজ দেখতে যায়।
কাউন্সিলরদের অধিকার আদায়ের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণকে বুঝাতে হবে সংসদ সদস্য আর কাউন্সিলরের এক নয়। তারা কোন এমপির ছোট ভাই নয়। এই বিষয়গুলো জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে। জনগণকে এই পার্থক্য বোঝাতে পারলে তারা এমপির কাছে যাবে না, আপনাদের কাছে আসবে। কাউন্সিলররা একটু বদ্ধ ভাবে কাজ করতে পারলে তাদের হারানো গৌরব ফিরে আসবে। তাছাড়া আইগত ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি কাউন্সিলরদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে মহাসমাবেশ করে সরকারকে বুঝিয়ে দিতে হবে, আপনাদের সাংবিধানিক ক্ষমতা কি। এভাবে করতে পারলে আপনারা কামিয়াব হবেন।
সংগঠনের আহ্বায়ক গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এডভোকেট মোঃ নজরুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন, সংবিধান বিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও বাংলাদেশ সিটি কর্পোরেশন কেন্দ্রীয় কাউন্সিলর এসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, রাষ্ট্র চিন্তক ও গণসংগঠক এবং যুক্ত ফোরামের প্রধান সমন্বয়ক সরদার শামস্ আল-মামুন (চাষী মামুন), ডিইউজের নির্বাহী সদস্য এম মোশাররফ হোসাইন প্রমুখ।