লালমনিরহাটে বন্যামুক্ত ও ভারী বর্ষণ না থাকায় চলতি মৌসুমে ফুলকপির বাম্পার ফলন হয়েছে। শীতকালীন সবজি ফুলকপির আগাম ফলনে সাড়া ফেলেছেন জেলার সবজি চাষিরা। আগাম ফুলকপি জেলার সবজির চাহিদা পূরণ করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রফতানি করা হচ্ছে।
লালমনিরহাটের সীমান্তবর্তী ৫ উপজেলায় আগাম জাতের ফুলকপি চাষ করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন কৃষকরা। খরচের চেয়ে তিনগুণ লাভ পেয়ে খুশি ফুলকপি চাষিরা। ভোর থেকে ফুলকপির বিক্রির ধুম পড়ে যায় গ্রামগুলোতে। পাইকাররা আসেন বিভিন্ন জেলা থেকে। কৃষাণ-কৃষাণী দলবেঁধে জমি থেকে ফুলকপি সংগ্রহ করে তা ওজনের পর বিক্রি হয়। ফুলকপি বহন করতে আসে অটোরিকশা, পিকাপ ও ট্রাক।
কৃষকরা বলেন, রোগ বালাই কম থাকায় আগাম জাতের ফুলকপির চাষ আবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ফুলকপি চাষ করে অধিক মুনাফা অর্জন করছি।
আগাম ফুলকপি পাওয়ায় ক্রেতাদের কাছে এর চাহিদাও বেড়েছে। বর্তমানে বাজারমূল্য বেশী পাওয়ায় চাষিরাও লাভবান হচ্ছেন। প্রতি কেজি ফুলকপি ৪০-৫০ টাকা ও প্রতি পিস ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি করেছেন কৃষকেরা।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বর্ষার পরপরই শীতের আগে আগস্ট মাসে ফুলকপির চারা রোপন করা হয়। আগামী ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ফলন পাওয়া যাবে। এবার জেলায় আগাম ২২০ হেক্টর জমিতে ফুলকপির চাষাবাদ হয়েছে। স্বল্প সময়ে ভালো ফলন হওয়ার পাশাপাশি অধিক মুনাফা পাওয়ায় অনেক চাষিই এখন ফুলকপি চাষে ঝুঁকছেন।
ফুলকপি চাষি মহির উদ্দিন বার্তা ২৪ কমকে বলেন, সাড়ে পাঁচ বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছি। খরচ হয়েছে দেড় লাখ, আশা করি চার লক্ষ টাকার ফুলকপি বিক্রি করব।
সবজি ব্যবসায়ী লিটন বার্তা ২৪ কমকে বলেন, আমরা প্রতিদিনই ট্রাকভর্তি করে কৃষকদের ফুলকপি দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে থাকি। বর্তমানে ফুলকপির চাহিদা ব্যাপক। দাম ভালো। চাষিরা লাভবান হচ্ছেন।
লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. মো. সাইখুল আরিফিন বলেন, লালমনিরহাট জেলা তিস্তাবিধৌত জেলা হলেও এর অধিকাংশ জমি উঁচু ও মাঝারি উচু জমিতে শাকসবজি আবাদের উপযোগী। মোটামুটি আগাম শাকসবজি আবাদ হয়েছে। বর্ষার পরপরই শীতের আগ মুহূর্তেই শাকসবজি তুলনামূলক কম থাকে। এই মুহূর্তে যারা আগাম সাবজি আবাদ করবে তারা নিঃসন্দেহে বাজারে ভালো দাম পাবে।
সেই সাথে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করতে এবং তা বাণিজ্যিকীকরণ করতে কৃষি বিভাগ সারা বছর সবজি চাষে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ ও কারিগরি সহযোগিতা করে আসছেন।
আগামী বছরে আবহাওয়া অনুকূল ও সার কীটনাশকের দাম কম এবং কৃষি বিভাগের সহযোগিতা পেলে কৃষকরা আরও দ্বিগুণ আগাম জাতে সবজি ফলার আশা ব্যক্ত করেন।