চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমের গাড়িবহরে থাকা একটি গাড়িতে ট্রাকের ধাক্কা দেওয়ার ঘটনায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দুজনের নামে মামলা হয়েছে।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) দিবাগত রাতে লোহাগাড়া থানায় ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িটির চালক বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- ট্রাকের চালক ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার বাসিন্দা মজিবুর রহমান (৪০) ও তাঁর ছেলে (ট্রাকটির চালকের সহকারী) রিফাত মিয়ার (১৮)।
বৃহস্পতিবার রাতে মামলার বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন লোহাগাড়া থানার সেকেন্ড অফিসার মো. মুমিন ফরহাদ। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত প্রাইভেটকারের চালক বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে বুধবার রাতে মামলাটি করেছেন। মামলায় ট্রাকের চালক ও হেলপারকে আসামি করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে দুজনকে আদালতের মাধ্যমে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে হাসনাত ও সারজিস আইনজীবী সাইফুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি চুনতি ফারাঙ্গা এলাকা থেকে ফিরছিলেন। তাঁদের গাড়িবহরে ১২টি মোটরসাইকেল, দুটি কার ও একটি পাজেরো গাড়ি ছিল। সাইফুলের গ্রামের বাড়ি থেকে ১২ কিলোমিটার পশ্চিমে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চুনতি হাজি রাস্তার মাথা। ওই এলাকায় বহরের গাড়িগুলো গ্রামীণ সড়ক থেকে মহাসড়কে উঠছিল। প্রথমে ১২টি মোটরসাইকেল ও পাজেরো গাড়িটি মহাসড়কে ওঠে। ওই পাজেরো গাড়িতে হাসনাত-সারজিস ছিলেন। পরে একটি প্রাইভেট কার মহাসড়কে উঠতেই চট্টগ্রামমুখী একটি মালবাহী ট্রাক গাড়িটির সামনের অংশে ধাক্কা দেয়। এতে কারটির সামনের বাঁ দিকের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত প্রাইভেট কারটিতে হাসনাত-সারজিসের কয়েকজন সফরসঙ্গী ছিলেন। তবে ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর ট্রাকটি নিয়ে চালক পালিয়ে যেতে চাইলে বহরে থাকা মোটরসাইকেল আরোহীরা ধাওয়া দিয়ে চালক ও সহকারীকে আটক করেন। পরে তাঁদের লোহাগাড়া থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। এরপর হাসনাত-সারজিস লোহাগাড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে সহকর্মীদের নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন।
বুধবার রাত ৯টার দিকে লোহাগাড়া থানার সেকেন্ড অফিসার মো. মুমিন ফরহাদ বার্তা২৪.কমকে জানিয়েছেন, আমরা এঘটনায় ওই ট্রাকটিসহ চালকে আটক করে থানায় নিয়ে এসেছি। হত্যাচেষ্টার যে অভিযোগ যেসসব বিষয়ে আমরা তাকে জিজ্ঞেসাবাদ করছি। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, ওই গাড়িতে সমন্বয়ক হাসনাত ও সারজিস ওরা ছিলেন না। তবে তাদের গাড়িবহর ছিল এটি। কারো রঙের ওই প্রাইভেটকারের চালকসহ চারজন ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন ছাত্র আন্দোলনের নেতা মো. আলী নেওয়াজ। অন্যদের নাম এখনো জানা যায়নি। তবে এঘটনায় প্রাইভেটকারের সামনে অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ভেরত থাকা কেউ গুরুতর আহত হয়নি।
এদিন রাত ১০টার কিছু আগে চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি নিয়ের ফেসবুকে লাইভে আসেন। ওই লাইভের শিরোনামে তিনি হত্যচেষ্টার অভিযোগ করে লিখেছেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা ঝুঁকি আছে। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুক। শহীদ এডভোকেট সাইফুল ইসলাম আরিফ ভাইয়ের কবর জেয়ারত করে ফেরার পথে আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আমাদেরকে ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়।’