ভোরের শিশির ভেজা ঘাস ও হিম ভাব জানান দিচ্ছে শীতের বার্তা। শীত মৌসুমকে ঘিরে প্রকৃতি ফিরে পায় তার নতুন যৌবন। ফলে প্রকৃতির সৌন্দর্য বেড়ে যায় আরও দ্বিগুণ। প্রকৃতির এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিনোদন পিপাসুরা ভ্রমণের জন্য প্রস্তুতি নেন। কর্মব্যস্ততা থেকে খানিকটা বিরতিতে পরিবারকে নিয়ে শীত মৌসুমে বিভিন্ন পিকনিক স্পষ্টগুলোতে গিয়ে মনকে প্রফুল্ল করে থাকেন। বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় এই মৌসুমে মার্চ মাস পর্যন্ত বেশ জমজমাট থাকে পিকনিক স্পটগুলো। বিনোদন পিপাসুদের জন্য প্রস্তুত নিতে ব্যস্ত করা হচ্ছে পিকনিক স্পটগুলো।
রংপুরে বেশকিছু পিকনিক স্পটগুলোর মধ্যে অন্যতম দর্শনীয় স্থান তাজহাট জমিদার বাড়ি। প্রাচীনতম এই স্থাপত্য দেখতে বিশেষ করে পিকনিক মৌসুমে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন দর্শনার্থীরা। আর তাই এই মৌসুমে দর্শনীয় স্থানগুলোতে বেড়ে যায় বাড়তি যত্ন। দৃষ্টিনন্দন ও সৌন্দর্যবর্ধক করতে নিয়োগ করা হয় একাধিক জনবল। চারিদিকে দর্শনার্থীদের নজর কারতে যুক্ত করা হচ্ছে গাছের তৈরি কার্টিং কারুকাজ।
সারাবছর ব্যবসা হলেও সাধারণত মৌসুমী এই ব্যবসার উপর অনেকটা নির্ভর করে থাকে কর্তৃপক্ষ। বাৎসরিক একটি লক্ষ্য নিয়ে ব্যবসায় নামেন কর্তৃপক্ষরা। তাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডও এগিয়ে চলছে পুরোদমে। অন্যান্য বিনোদন স্পটগুলোর মত পীরগঞ্জের আনন্দনগরেও বিনোদন প্রত্যাশীদের আকর্ষণ করার বিভিন্ন প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানা গেছে।
রংপুর তাজহাট জমিদার বাড়িতে বেড়াতে আসা দর্শনার্থী অন্তরা বর্মন বলেন, 'সূদুর টাঙ্গাইল থেকে শশুর বাড়ির পুরো পরিবার নিয়ে এসেছি। আমার বাসা রংপুরে এর আগে অনেকবার এসেছি। এবার তাদের উদ্দেশ্য আবারও আসা। সকলকে নিয়ে খুব আনন্দ হচ্ছে যে পুরনো নিদর্শন, রাজার ব্যবহৃত জিনিসপত্র, রেখে যাওয়া প্রাসাদসহ পুরো বাড়ি পড়ে আছে। মনে হচ্ছে সেই রাজাদের আমলে হারিয়ে যাচ্ছি। মনকে আনন্দ দেয়ার জন্য আসা, সবসময় সুযোগ হয়না, এখন যেহেতু হালকা শীত তাই ঘুরেও শান্তি। সবমিলিয়ে খুব ভালো লাগছে।'
তাজহাট রাজবাড়িতে প্রবেশ করলেই চোখে পরবে রাজার রেখে যাওয়া বাগান। সেখানে বিদেশি মেশিনে গাছকে বিভিন্ন কার্টিং করা হয়। এই কাটিং কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। তারা জানান, সবসময় যত্ন নেয়া হয় তবে পিকনিকের মৌসুমে পুরো রাজবাড়িতে রং করা, চারিদিকে গাছ কাটিং, রোপন, বিভিন্ন কাজে ব্যস্ততা থাকেন তারা।
উল্লেখ্য, রংপুরে যে সকল পিকনিক স্পট বা বিনোদন পার্ক রয়েছে তার মধ্যে রংপুর পাগলাপীরের অবস্থিত ভিন্নজগৎ, পীরগঞ্জের আনন্দনগর, মাহিগঞ্জ এলাকার তাজহাট জমিদার বাড়ি, রংপুর চিড়িয়াখানা অন্যতম। এছাড়াও নগরীর মধ্যে দৃষ্টিনন্দন চিকলি ওয়াটার পার্ক, মিঠাপুকুরের ইকোপার্কসহ আরও বেশকিছু স্থান রয়েছে, যে জায়গাগুলোতেও বিনোদন প্রত্যাশী মানুষের ব্যাপক সমাগম ঘটে।
এ বিষয়ে ভিন্ন জগতের দায়িত্বরত সুপারভাইজার শরিফুল ইসলাম জানান, বিনোদন পার্কগুলোতে সারা বছরেরই দর্শনার্থী পাই। তবে শীত মৌসুমে শিশুদের বিদ্যালয়, অফিস, আদালত বন্ধ থাকায় এবং হালকা শীত আবহাওয়ায় প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীদের ভিড় জমে। আমরা তাদের জন্য সুব্যবস্থা করেছি। তাদের বিনোদন দিতে বিভিন্ন রাইড ও স্থাপনা সংযুক্ত করেছি। এই মৌসুমে ব্যবসার একটা টার্গেট থাকে আমরা আশাবাদী তা পূরণ হবে।