কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে পদত্যাগ করা অধ্যক্ষকে ফের পুনর্বহালের পায়তারা শুরু হলে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এই দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাল্টাপল্টি আন্দোলনের মুখে জহুরুল ইসলাম নার্সিং কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) নার্সিং ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক আজহারুল ইসলামের নির্দেশে কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাহার উদ্দিন ভূঁইয়া।
নার্সিং কলেজের কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, কলেজের অধ্যক্ষ আলপনা বেগম নানা রকম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন। আওয়ামী লীগের আমলে তার ভয়ে নিশ্চুপ থাকতো শিক্ষার্থীরা। সরকার পতনের পর তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুললে আলপনা বেগম গত ১৮ আগস্ট নার্সিং ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালককে চিঠি দিয়ে পদত্যাগ করেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার ডিপ্লোমা নার্সিংয়ের শিক্ষার্থীরা আলপনা বেগমকে ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন শুরু করেন। অথচ ডিপ্লোমা নার্সিংয়ের শিক্ষার্থীরাই মূলত অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন। হঠাৎ তাকে ফিরিয়ে আনতে গোপনীয় কি রফাদফা হলো তা নিয়ে এখন নানান আলোচনা হচ্ছে এলাকায়।
গত শনিবার সন্ধ্যায় পদত্যাগ করা অধ্যক্ষকে ফিরিয়ে আনার দাবিতে পক্ষে-বিপক্ষের দুই গ্রুপের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। ডা. বাহার উদ্দিন ভূ্ইঁয়া পরিস্থিতি শান্ত করতে গেলে তাঁকে প্রায় আড়াই ঘন্টা একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। এরকম পরিস্থিতিতে নার্সিং কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে শিক্ষার্থীরা হোস্টেল ছেড়ে চলে যান।
জহুরুল ইসলাম নার্সিং কলেজের শিক্ষক লিলি মনির ভাষ্য, শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের অপমান করেন, নাম ধরে ডাকেন। এ পরিস্থিতিতে কলেজের ১১ জন শিক্ষকের মধ্যে ৯ জন শিক্ষকও পদত্যাগ করেছেন। শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে নতুন শিক্ষক নিয়োগের আবেদন জানিয়েছেন।
জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাহার উদ্দিন ভূ্ইঁয়া বলেন, গত বৃহস্পতিবার বাজিতপুরের ইউএনও ফারাশিদ বিন এনাম, উপজেলায় নিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাসহ মেডিক্যাল কলেজ ও নার্সিং কলেজ কর্তৃপক্ষ সভা করেছেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আন্দোলনকারী উভয় পক্ষের শিক্ষার্থীদের তিনজন করে প্রতিনিধি নিয়ে ৯ জানুয়ারি গভর্নিং বডির সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ডা. বাহার উদ্দিন আরও বলেন, নার্সিং কলেজের ১১ জন শিক্ষকের মধ্যে ৯ জন শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন। এ কারণে নতুন করে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও প্রভাষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। তবে ইতোপূর্বে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী পাওয়া যায়নি। নতুন করে আবার চেষ্টা করা হচ্ছে।