নীলফামারীর সৈয়দপুরে তালাবদ্ধ ঘর থেকে শবনম পারভীন (২৮) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে শহরের নয়াবাজার এলাকায় তালা ভেঙে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এদিকে সকাল থেকেই ওই গৃহবধুর স্বামী পলাতক রয়েছেন।
শবনম পারভীন সৈয়দপুর পৌর শহরের ফুচকা ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী ও উপজেলার বাঙালীপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মণপুর পীরপাড়ার মৃত আব্দুর রহমানের মেয়ে। তার এক বছর বয়সী একটি মেয়ে সন্তান আছে।
গৃহবধূর স্বামী জাহাঙ্গীর হোসেন সৈয়দপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মুন্সিপাড়ার (দর্জিপাড়া) মমতাজ হোসেনের ছেলে। তিনি দুই সন্তানের জনক। প্রথম স্ত্রী সন্তান থাকাবস্থায় এক মাস আগে নিহত শবনমকে বিয়ে করেন। কিন্তু এতদিন শবনম তার মায়ের বাড়িতেই ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) শহরের নয়াবাজার এলাকায় আব্দুল মজিদ খানের বাসার একটা রুম ভাড়া নিয়ে সেখানে শবনমকে এনে রাখেন জাহাঙ্গীর। এদিকে আজ সকাল থেকে ওই ঘরে তালা ঝুলতে দেখেন স্থানীয়রা। সন্ধ্যায় খোঁজ করতে এসে ঘরের জানালা দিয়ে দেখতে পান খাটের ওপর লেপ-কাঁথা দিয়ে পেঁচানো অবস্থায় মেয়েকে দেখতে পান। অনেক ডাকাডাকির পরও সাড়া না দেয়ায় চিৎকার শুরু করেন। এতে আশেপাশের লোকজন এসে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার এ কে এম ওয়াহিদুন্নবী (সৈয়দপুর সার্কেল) ও সৈয়দপুর থানার ওসি ফইম উদ্দিন ঘটনাস্থলে এসে তালা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করেন।
শবনমের মা ফারজানা বলেন, জাহাঙ্গীর ও তার প্রথম স্ত্রী পরিকল্পনা করে আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছে। আমি এখন মেয়ের অবুঝ মেয়েটিকে নিয়ে কিভাবে বাঁচবো। আমার মেয়ের হত্যাকারীদের আমি বিচার চাই।
শবনমের বোন রক্সি পারভিন জানান, দেড় মাস আগেই শহরের ফুচকা বিক্রেতা জাহাঙ্গীরের সাথে আমার বোনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর পরই কিছুটা মনোমালিন্য চলছিল তাদের। বোনকে নিয়ে সে কোথায় ভাড়ায় থাকে সেটাও আমরা জানতাম না। এরই মাঝে আজকে ফোনে দুলাভাইয়ের সাথে কথা বললে তিনি দম্ভ করে বলেন, তোর বোনকে মেরে ফেলে দিয়েছি, আসে লাশ নিয়ে যা। কথা শুনে রীতিমতো চমকে উঠি। পরে কোথায় ভাড়া থাকে তা খবর লাগিয়ে নয়াবাজার এলাকায় আসি। সেখানে জানলাম যে কালকেই তারা এখানে একটি বাড়িতে ভাড়ায় উঠেছে। বাড়িটি বাইরে থেকে তালা লাগানো ছিল। জানালা থেকে দেখি বোনের নিথর দেহ খাটে পড়ে আছে।
সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফইম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে তালা ভেঙে ভাড়ায় নেয়া ঘর থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক সুরতহাল করা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্ত করতে হবে। সেজন্য আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। তার স্বামী পলাতক রয়েছেন। মামলা হলে আসামি গ্রেফতারে অভিযান চালানো হবে।