পঞ্চগড়ে শীতার্তদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ১২টায় তেঁতুলিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ প্রাঙ্গণে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার হেলিকাপ্টার অবতরণ করে। পরে ওই স্কুল মাঠ প্রাঙ্গনে প্রতিবন্ধী, দরিদ্র ও অসহায় মানুষের হাতে এসব কম্বল তুলে দেন। কনকনে শীতে ভালো মানের শীতবস্ত্র পেয়ে হাসি ফুটেছে প্রায় ২ হাজার দরিদ্র মানুষের মুখে।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় প্রতি বছরে শীত এলেই কাবু হয়ে পড়েন দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার মানুষ। গত বছরের তুলনায় এ বছরে শীতের দাপট ব্যাপক লক্ষ্য করা গেছে। ডিসেম্বরের শুরু থেকে ১০ থেকে ১২ ডিগ্রির ঘরে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। এতে এই জেলায় বাড়তে থাকে কনকনে শীত। হিমালয় পর্বত কাছাকাছি হওয়ায় উত্তরের হিমেল বাতাসে ঠান্ডায় অসহায় হয়ে পড়েন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। শীতে অসহায় মানুষকে উষ্ণতা দিতে এগিয়ে এসেছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ।
শীত বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আসিফ মাহমুদ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, মাননীয় উপদেষ্টা স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সারজিস আলম, সাধারণ সম্পাদক জুলাই-আগষ্ট শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন ও সমন্বয়ক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সভাপতিত্বে ছিলেন, মো. সাবেদ আলী, জেলা প্রশাসক পঞ্চগড়। এ ছাড়া আরও সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
উক্ত শীত বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, আমরা জুলাই গণঅভ্যুর্থানের সময় এবং তার পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে আমাদের স্লোগানে আসতো টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া। এই স্লোগান দেওয়ার জন্য সবাই তেঁতুলিয়াকে সবাই চেনে। আজকে আসার সুযোগ হলো দেখার সুযোগ হলো, তাই আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। আমরা বিজয়ের মাসে মহান মুক্তিযোদ্ধের শহীদদেরকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে এবং জুলাই গণঅভ্যুর্থানে শহীদ এবং আহতরা তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখতে পাচ্ছি। আমরা দীর্ঘ ফ্যাসিবাদ সরকার থেকে মুক্তি পেয়েছি, তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।
আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, আমি উত্তরবঙ্গে এসেছি উত্তরবঙ্গের প্রায় ১২টি জেলায় ২২টি উপজেলা আমি পরিদর্শন করব। শুধুমাত্র একটি বিশেষ কারণে আপনারা জানেন, বিগত সময়ে উন্নয়ন কর্যক্রমের ক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গ অবহেলিত হয়েছে। বঞ্চিত হয়ে আসছে। আমি নিজেই সরেজমিনে তাই পরিদর্শন করতে চেয়েছি। আপনাদের কথাগুলো শুনতে চেয়েছি আপনাদের দাবিগুলো জানতে চেয়েছি। স্থানীয় অবকাঠামোগত উন্নয়নে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় উত্তরবঙ্গের প্রতিটি মন্ত্রণালয় এবং বৈষম্য হয়েছে সেটা নিয়ে সরেজমিনে কাজ করবে। আপনাদের যে অবকাঠামো উন্নয়ন প্রয়োজন সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় কাজ করবে।
এ সময় তিনি নাগরিক সেবাকে অগ্রাধীকার দিতে তেঁতুলিয়া ও উপজেলার কর্মকর্তাবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জনগণকে আপনাদের কাজের ক্ষেত্রে কোন প্রকার হেনস্থা কিংবা কালক্ষেপণ, ঘুষ-দুর্নীতি এধরণের কোনো কিছুর সঙ্গে জড়িত হবেন না। এবং তেঁতুলিয়াবাসীর কাছে আহ্বান থাকবে কোন সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এধরণের কোন আবদার করে ঘুষ চাই কিংবা দুর্নীতির সাথে জড়িত আছে বলে আপনার দেখেন তাহলে অবশ্যই সেটা আমাদেরকে জানাবেন আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিব।