পাখি পালনে স্বপ্ন বুনছেন তরুণ উদ্যোক্তা সোহান

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল | 2025-01-11 22:08:10

শখের বসে ছোটবেলায় পাখি পালন শুরু করেন। ২০০৭ সালে তার বাবা বিদেশি পাখি কিনে দেন তাকে। বাসার ভেতর লালন পালন শুরু করেন। ধীরে ধীরে সেই পরিসর বড় হতে থাকে। ২০১৮ সালে অনেকটা বড় পরিসরে চলে যায় তার শখের এই পাখি পালন। ৫ হাজার থেকে শুরু করে ৬০ হাজার টাকা দামের পাখি রয়েছে তার খামারে।

পাখি পালনে স্বপ্ন বুনছেন তরুণ উদ্যোক্তা টাঙ্গাইল শহরের কান্দিলা এলাকার অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ুয়া ছাত্র সোহান খান। সোহান খান ওই এলাকার মৃত মাহবুবুর রহমান খানের ছেলে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লাভবার্ড, ককাটেল, কুনুর, লরিকেট, মং পেরাকিট ও ভার্জিনাসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৬০ জোড়া বিদেশি পাখি রয়েছে তার খামারে। পাখি দেখতে অনেকেই ছুটে আসছেন তাঁর পাখির খামারে। ২০২৫ সালেই পুরোপুরি বাণিজ্যিকভাবে বাজারে ছাড়বেন এসব পাখি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে তিনি ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছেন এসব পাখি নিয়ে।


জানা যায়, টাঙ্গাইলে ব্যাপক সম্ভাবনার ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে পাখি পালনে। জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বিদেশি পাখি পালন। এ পেশায় এগিয়ে আসছেন তরুণ উদ্যোক্তারা। কেউ কেউ ব্যাপক পরিসরে পাখি পালন করতে যাচ্ছেন। দেশেই উৎপাদন করা হচ্ছে লাখ লাখ টাকা দামের পাখি।

পাখির খামার দেখতে আসা হাবিবুল্লাহ শেফুল বলেন, কলেজ পড়ুয়া ছাত্র সোহানের পাখির খামার দেখে ভালো লেগেছে। আমি খুব উদ্ভুদ্ধ হয়েছি। আশা করছি যে যত বেকার সমাজ আছে তারা সোহানের মতো পাখি পালন করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে। আমিও ভবিষ্যৎতে পাখির খামার করবো।

পাখির খামার দেখতে আসা নাহিন বলেন, সোহান ভাইয়ের বাড়ির পাশাপাশি আমার বাড়ি।আমি মাঝে মাঝে খামার দেখতে আসি। আমারও ইচ্ছে আছে সোহান ভাইয়ের পরামর্শ নিয়ে পাখি পালন করার।

পাখি খামার দেখতে আসা আরিফ বলেন, আমি বিভিন্ন জায়গায় দেখতে যেতাম পাখি দেখতে। পাখি দেখতে দেখতে পাখির প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়ে গেছে। আমি নিজেও পাখি পালন করি।

তরুণ উদ্যোক্তা সোহান খান বলেন, আমি ছোটবেলা থেকে পাখি পালন করতেছি। ২০১৮ সালে অনেকটা বড় পরিসরে পাখি পালন শুরু করি।যখন আমার এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হয়। তখন আমি ভাবতে ছিলাম কিছু একটা করা দরকার। পাখি পালনে আমার ছোটবেলার অভিজ্ঞতা ছিল। তাই পাখি পালনকে বেছে নেই। তখন থেকেই পাখি পালন শুরু করি।

তিনি বলেন,বাংলাদেশে পাখির খুব চাহিদা আছে। পাখি পালন যদি কেউ বাণিজ্যিক ভাবে করতে পারে খুবই ভালো। আমি এখন বাণিজ্যিক ভাবে শুরু করতেছি। আমার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভালো অবস্থান রয়েছে। আমার কাছে মানুষ প্রচুর পাখি চায়। আমি মানুষের চাহিদা পূরণ করতে পারি না। বাংলাদেশে প্রচুর পাখি আমদানি হয়। দেশে থেকে যদি পাখির চাহিদা পূরণ করা যায় তাহলে খুবই ভালো। আমাদের দেশে নতুন অনেক পাখির খামার হচ্ছে।

সোহান আরও বলেন, আমি আমার খামারে পাখি বাড়াচ্ছি। আমার খামারে অনেক পাখির জন্ম নিয়েছে। আমার খামারে পাঁচ হাজার টাকা থেকে ষাট হাজার টাকা দামের পাখি রয়েছে। আমার পরিকল্পনা পাখি আরও বাড়ানো। কেউ বেকার বসে আছে। কেউ কাজ পাচ্ছে না। তারা কিন্তু পাখি পালন শুরু করতে পারে। অবশ্যই জেনে পাখি পালন শুরু করতে পারে। কেউ না বুঝে শুরু করলে সমস্যা হবে। ভালো ভাবে জেনে শুরু করলে সফল হবে। তার আর মনে হয় না চাকুরী করার দরকার আছে।

টাঙ্গাইল প্রকৃতি ও জীবন ক্লাবের উপদেষ্টা হারুন অর রশিদ বলেন, পাখির খামার করে বাংলাদেশে তরুণরা সফলতা অর্জন করছে। লাভবার্ড বা বিদেশী যে পাখি এই পাখি গুলো যখন বাংলাদেশে আমদানি করে থাকি। তখন দেখা যায় যে ডলার সংকট। যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সেখানে আঘাত লাগে। সেখানে যদি আমরা বাংলাদেশে বেকার যুবক যারা রয়েছে। যারা তরুণ উদ্যোক্তা রয়েছে তাদেরকে যদি আমরা অনুপ্রাণিত করতে পারি। তাহলে তারা পাখির খামার করে সফলতা অর্জন করতে পারবে। বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর