জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে দিন দিন বাড়ছে বায়ুদূষণ। মেগাসিটি ঢাকাও রয়েছে সেই বায়ুদূষণের কবলে। দিন দিন খারাপ হচ্ছে ঢাকা শহরের বায়ুর মান। আশঙ্কার বিষয় হলো, দূষিত বায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবে শ্বাসনালী ও ফুসফুসের নানা সমস্যায় পড়ছেন এ শহরের বাসিন্দারা।
জানা যায়, বাতাসে ক্ষতিকর কণার উপস্থিতিতে শ্বাসনালীর সুরক্ষা কোষগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় মানুষের। তাই জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ে বায়ুদূষণে। আর দীর্ঘদিন ধরে মেগাসিটি ঢাকা রয়েছে সেই বায়ুদূষণের কবলে। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় রয়েছে শহরটি বায়ু।
সকাল ৯টা ৪৬ মিনিটের দিকে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের তথ্যানুযায়ী, ২৫৬ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাজধানী ঢাকা।
একই সময়ে ২৩৭ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোর কিনশাসা। এ ছাড়া ২৩৩ স্কোর নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের করাচি শহর, ২০৩ স্কোর নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে উজবেকিস্তানের তাসখন্দ এবং পঞ্চম অবস্থানে থাকা ভারতের দিল্লি শহরের স্কোর ১৯২।
একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়, আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়।
২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়াই ভালো। সম্ভব হলে ঘর থেকে কেবল সেই সময় বের হবেন, যখন বাতাসে দূষণ কম থাকে। তবে অধিকাংশ মানুষের পক্ষেই এ নিয়ম মেনে চলা সম্ভব নয়। তাই মাস্ক পরার অভ্যাস ফিরিয়ে আনুন। বাইরে গেলেই মাস্ক পরুন। হোক তা কাপড়ের মাস্ক। তবু বেশ সুরক্ষিত থাকবেন। মাস্কও রাখুন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। যেসব কাজে বায়ুদূষণ হয়, সেগুলো থেকে নিজেকে বিরত থাকুন, অন্যদেরও বিরত রাখার চেষ্টা করুন।