বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারী ও হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি মো. সাজ্জাদ হোসেনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গ্রেফতারকৃত সাজ্জাদ নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের মোহাম্মদপুর থানা সহ-সভাপতি।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর কেরানীগঞ্জ থেকে র্যাব ২ এর একটি দল তাকে গ্রেফতার করে বলে জানিয়েছেন ব্যাটালিয়নটির সহকারী পরিচালক(মিডিয়া) খান আসিফ তপু।
তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারী ও আন্দোলনে নিহত আকতার হোসেন হত্যা মামলার অন্যতম এজাহারনামীয় আসামি এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. সাজ্জাদ হোসেন (২৪)-কে রাজধানীর কেরানীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব ২।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আন্দোলন দমাতে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি এলাকায় তাদের নির্মমভাবে হামলা করে সাজ্জাদ। তার বেশকিছু স্থিরচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
বাদীর এজাহার ও তথ্য সূত্রে জানা গেছে, নিহত আকতার পেশায় চাকরিজীবী। ২০২৪ সালের ৫ জুনের পর সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে সারা বাংলাদেশে একযোগে আন্দোলন শুরু হয়। উক্ত আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গত ১৪ জুলাই আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাজাকার সম্বোধন করলে সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনের ডাক দেয়। এই কর্মসূচী প্রতিহত করতে মামলার ২৭ নং আসামি সাজ্জাদ হোসেন সহ অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ৩০০ জন আসামি মোহাম্মদপুর থানাধীন বসিলা মেইন রোডের মমতাজ শপিং কমপ্লেক্সের সামনে ছাত্র জনতার মিছিলে দেশীয় অস্ত্র আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা করে।
ঘটনার দিন দুপুর ৩টার দিকে সময় আক্তার হোসেন (৩৫) ডিউটি শেষে বাসায় ফেরার পথে হামলার শিকার হন এবং মারাত্মকভাবে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকে। রাস্তায় নিথরভাবে পড়ে থাকা অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। নিহতের স্ত্রী হাসপাতালে ছুটে যায় এবং তার স্বামী আক্তার হোসেনকে শনাক্ত করে। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আক্তার হোসেনকে মৃত ঘোষণা করে। তখন দেশের সার্বিক পরিস্থিতি খারাপ থাকায় ময়নাতদন্ত ব্যতীতই ভিকটিম মৃত আক্তার হোসেনকে তার গ্রামের বাড়িতে দাফন সম্পন্ন করে।
এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী আকলিমা বেগম (২৫) ১৬৭ জন আসামি সহ অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ৩০০ বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এই মামলার আসামি মো. সাজ্জাদ হোসেন বিগত সরকার দলীয় সংগঠনের ছত্রছায়ায় একটি গ্যাং পরিচালনার মাধ্যমে মোহাম্মদপুর, আদাবর, ধানমন্ডি এলাকায় চুরি, ডাকাতি, সংঘবদ্ধ ছিনতাই সহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম সহ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল।