ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেওয়া রাকিবুল হাসান এছাহীকে জামিন দিয়েছেন আদালত। পুলিশের ভাষ্যে রাকিব প্রশ্ন ফাঁস চক্রের ‘হোতা’ হিসেবে চিহ্নিত।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. কামরুল হোসেন মোল্লা গত মঙ্গলবার ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় এছাহীর জামিন মঞ্জুর করলেও আদালত সাংবাদিকরা বিষয়টি জানতে পারেন বৃহস্পতিবার।
কোর্ট রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী পরিষদের সভাপতি আবুল কালাম আজাদও তার জামিন শুনানিতে অংশ নিয়েছিলেন বলে গণমাধ্যমকে জানান।
রকিবুল হাসান এছাহী পাবনা জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে তাকে গত ১১ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট। এছাহীকে গ্রেপ্তারের পর ওই ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ইন্দিরা রোডের যে ছাপাখানায় ছাপা হত তার কর্মচারী খান বাহাদুরের কাছ থেকে প্রশ্ন সংগ্রহ করে তা মোটা টাকায় বিক্রি করত এই প্রতারক চক্র। এই চক্রের হোতা ছিলেনে এছাহী। প্রশ্ন বিক্রি করতে শিক্ষার্থী সংগ্রহের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নিয়ে চক্র গড়ে তুলেছিলেন তিনিই।
অন্যদিকে, প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে শাহবাগ থানার এই মামলায় এছাহী ছাড়াও চার আসামি জামিন পেয়েছেন। এরা হলেন- ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইশরাক হোসেন রাফি, সুজাউর রহমান সানা, আজিজুল হাকিম ও তানভীর আহমেদ মল্লিক।
এদের মধ্যে সানা ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত থেকে, আজিজুল মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে এবং মল্লিক ও রাফি শিশু আদালত থেকে জামিন পান।
গত ২০ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে শহীদুল্লাহ হল থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক মহিউদ্দিন রানা ও আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে এক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। তাদের কাছ থেকে এটিএম কার্ডের মতো দেখতে ইলেকট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করা হয়, যা দিয়ে পরীক্ষা চলাকালে কানে আরেকটি ডিভাইস রাখা পরীক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
এই দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে ভর্তি জালিয়াতির তদন্তে নেমে ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। তাদের মধ্যে রাকিবুল হাসান এছাহীসহ ১১ জন দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।