প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হালদা নদী। আগামী সপ্তাহের অমাবস্যা শুরু হলে ডিম দিতে পারে মা মাছ। আর সেই ডিম সংগ্রহ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে প্রশাসন। ইতোমধ্যে সরকারি হ্যাচারিগুলো সংস্কার করা হয়েছে। নদীর পাড়ে কূপ খনন করা হয়েছে। প্রস্তুত আছেন জেলেরাও। শুধু অপেক্ষা অমাবস্যার।
চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মুমিনুল হক বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আগামী ৩-৫ এপ্রিল অমাবস্যায় হালদায় ডিম ছাড়তে পারে মা মাছ। এজন্য আগেভাগে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। জেলেদের নিয়ে সভাও করা হয়েছে। হাটহাজারী ও রাউজানে সরকারি হ্যাচারিগুলো সংস্কার করতে দুই উপজেলা থেকে সরকারি বাজেট দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রস্তুত। এবার ঠিকঠাক মতো ডিম সংগ্রহ করা গেলে গত বছরের চেয়ে বেশি রেণু উৎপাদন করা সম্ভব হবে।’
এ ব্যাপারে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘হ্যাচারি সংস্কার করতে উপজেলা পরিষদ থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ৪০টি কূপ সংস্কার করা হয়েছে। প্রত্যেক হ্যাচারিতে একজন করে কেয়ারটেকারও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’
জানা গেছে, প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হাদলায় প্রতিবছর এপ্রিল ও মে মাসে ডিম দেয় মা মাছ। প্রায় সাড়ে তিনশত নৌকায় এক হাজার জেলে এ ডিম সংগ্রহ করে। সংগৃহীত ডিম থেকে রেণু ফোটানোর জন্য হাটহাজারী ও রাউজানে সাতটি সরকারি হ্যাচারি রয়েছে। এছাড়া জেলেদের রয়েছে আরও এক হাজার কূপ। এসব কূপে রেণু ফোটানো হয়। রেণু থেকে চট্টগ্রামে স্থানীয় পোনার চাহিদা পূরণ করা হয়।
হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘হালদায় প্রাকৃতিক নিয়মেই ডিম ছাড়ে মা মাছ। মাছ কখন ডিম ছাড়বে বা কী পরিমাণ ডিম ছাড়বে, তা কেউই বলতে পারে না। তবে ডিম সংগ্রহের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা ভালো উদ্যোগ।’
তিনি আরও বলেন, ‘হালদা পরিদর্শন করে জেলেদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছি। ডিম সংগ্রহের পরে রেণু ফোটানোর অভাবে অনেক ডিম নষ্ট হয়ে যায়। এবার আরও অধিক রেণু ফোটানো যাবে বলে আশা করছি।’