তদন্ত বিশ্বমানের না হওয়ায় সাজার হার কম: দুদক চেয়ারম্যান

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪ডটকম | 2023-09-01 01:25:19

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, সংস্থার তদন্তের মান যদি বিশ্বমানের হতো তাহলে হয়তো সাজার হার শতভাগে উন্নীত হতো। তাই কমিশন নিজস্ব সক্ষমতা বাড়াতে বহুমাত্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

রোববার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ইউএসএআইডি-এর কনসালট্যান্ট এবং গভর্নেন্স অ্যাডভাইজর রুমানা আমিন অর্চির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি একথা জানান।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি একটি গভর্নেন্স ইস্যু এবং এর নিয়ন্ত্রণ করাও অত্যন্ত জটিল। দেশের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে রাজনীতিবিদ, আমলা, সুশীল সমাজ, মিডিয়া, বুদ্ধিজীবী, এনজিও, ব্যবসায়ীসহ সবার সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের নিজস্ব সক্ষমতা এবং ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্যই বর্তমান কমিশন প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা এবং কর্মপ্রক্রিয়ায় ব্যক্তির ভূমিকাকে গৌণ করে পদ্ধতিগত সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন প্রতিষ্ঠার আগেও দুর্নীতি দমনে একটি প্রতিষ্ঠান ছিল। তারপরও কেন কমিশন করা হলো? মূলত দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে উন্নত কর্মকৌশল প্রয়োগ করে সমন্বিত এবং পরিকল্পিতভাবে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা এবং সমাজের সর্বস্তরে প্রবাহমান একটি শক্তিশালী দুর্নীতিবিরোধী সংস্কৃতির চর্চা এবং এর প্রসার সুনিশ্চিত করাই ছিল এর মূল লক্ষ্য।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান কমিশন সবচেয়ে বড় সংস্কার করেছে অভিযোগ গ্রহণ প্রক্রিয়ায় গ্রেডিং সিস্টেম প্রবর্তন করে। এখন কমিশনের যে কেউ ইচ্ছা করলেই নির্ধারিত নম্বরে কল পেলেই অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করতে পারবেন না। একইভাবে সম্পদ পুনরুদ্ধার ইউনিট, গোয়েন্দা ইউনিট, সশস্ত্র ইউনিট, হাজতখানা ইত্যাদি সৃষ্টি করে কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ‘কমিশনের তদন্তের সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করার জন্য কর্মকর্তাদের দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কমিশনের মামলায় সাজার হার বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৭০ শতাংশের কাছাকাছি উন্নীত হয়েছে,’ যোগ করেন দুদক চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, সরকারি সেবা প্রদানের প্রক্রিয়াকে পদ্ধতিগত সংস্কারের মাধ্যমে ঘুষ, দুর্নীতি, দীর্ঘসূত্রিতা এবং জনহয়রানি লাঘবের লক্ষ্যে কমিশন ২৮টি প্রাতিষ্ঠানিক টিম গঠন করেছে।

শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সেবাখাতে কমিশন প্রণীত বেশকিছু সুপারিশ সরকার এর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হয়েছে জানিয়ে ইকবাল মাহমুদ বলেন, বিদ্যমান বিজনেস প্রসেস রি-ইঞ্জিনিয়ারিং ছাড়া শুধু মামলা-মোকদ্দমা করে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা যাবে না। কমিশন স্থানীয় পর্যায়ে সরকারের কল্যাণমূলক কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে গণ-শুনানি কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

এতে স্থানীয় সরকারি সেবা প্রত্যাশী জনগণ এবং সেবা প্রদানে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের মধ্যে প্রত্যক্ষ সংযোগের মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান হচ্ছে। তিনি বলেন, জনগণের ক্ষমতায়ন হচ্ছে। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা অনুধাবন করছেন জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক। এতে দুর্নীতি, অনিয়ম এবং সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে জনগণের কণ্ঠ উচ্চ হচ্ছে।

যা দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রশংসাও পাচ্ছে। শুদ্ধাচার বিকাশ কমিশন কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ যেমন সততা স্টোর স্থাপন, সততা সংঘ গঠন ইত্যাদি কার্যক্রমও অবহিত করেন দুদক চেয়ারম্যান।

এ সম্পর্কিত আরও খবর