ঘূর্ণিঝড় ফণী’র কারণে বৃহস্পতিবার মংলা ও পায়রা বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। তবে এখনো এর তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি বাগেরহাটের মোংলাসহ আশপাশ উপকূলীয় এলাকায়। সকাল থেকে আকাশ পরিষ্কার রয়েছে
আবহাওয়ার সমুদ্রবন্দরের সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছে, পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। এটি বৃহস্পতিবার (২ মে) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৬৫ কিলোমিটার, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০২৫ কিলোমিটার, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১৫ কিলোমিটার এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৯২৫ কিলোমিটার অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত ও উত্তর/উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শুক্রবার (৩ মে) বিকেল নাগাদ ভারতের ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এদিন সন্ধ্যার দিকে খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার যা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ফলে মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ০৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
এদিকে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৬ নম্বর নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
অপরদিকে কক্সবাজার সমূদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমের সময় চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলা সমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৯০-১১০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্ত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া ভালো থাকায় মংলা বন্দরে অবস্থানরত বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য বোঝাই-খালাস স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দরের হারবার মাস্টার কমান্ডার দুরুল হুদা।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান জানান, বনবিভাগের সদস্যদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বনপ্রহরীদেরকে তাদের ব্যবহৃত অস্ত্র-গুলি নিয়ে নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে ঝড়ের আঘাত হানার আশঙ্কা ও পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসন।