দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী দূষণের অভিযোগে চট্টগ্রামের নন্দীরহাটের এশিয়ান পেপার মিলের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে রাউজান পৌরসভার সত্তারঘাট এলাকায় স্থানীয় পোনা সংগ্রহকারীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ নির্দেশ দেন।
জানা যায়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও হালদা পাড়ের মানুষের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। মতবিনিময় সভায় পোনা সংগ্রহকারীরা হালদা দূষণ নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ করেন এবং এশিয়ান পেপার মিলের বিষয়টিও এ সময় তুলে ধরা হয়। পেপার মিলের বর্জ্য বিভিন্ন ছড়া হয়ে হালদা নদীতে গিয়ে পড়ে।
অভিযোগ শুনে সচিব একই মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রোকন উদ্দৌলাহকে এশিয়ান পেপার মিলের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দেন। তিনি বিষয়টি পরিবেশ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার জন্যও বলেন।
এ ব্যাপারে হালদা গবেষক ও চবির অধ্যপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘হালদার মা মাছের ডিম আহরণকারী ও প্রশাসনের সমন্বয় সভায় সিদ্ধান্ত হয় হালদার দুষণকারী প্রতিষ্ঠান এশিয়ান পেপার মিলের বিরুদ্ধে মামলা করার। এর জন্য পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রামকে অবহিত করা হয়েছে। ঐ পেপার মিলে বর্জ্য শোধানাগার নেই। ফলে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে খালে।’
চট্টগ্রামের চিকনদণ্ডী ইউনিয়নের নন্দীরহাটে এশিয়ান পেপার মিলের অবস্থান। এর পাশে হালদার নদীর শাখা খাল মাদারী খাল ও কাটাখালী খাল হয়ে এ মিলের বর্জ্য সরাসারি হালদায় চলে যায়। এতে ব্যবহ্নত রাসায়নিক মা মাছের ক্ষতি করছে। ফলে বিগত সময়ে বেশ কয়েকবার মা মাছ মরে গেছে। মা মাছের ডিমও কমে এসেছে।
জানা গেছে, ২৫ মে রাতে হালদায় ডিম ছাড়ে মা মাছ। এবার ডিমের পরিমাণ ছিল সাত হাজার কেজি। উক্ত ডিম থেকে ১২০ কেজি রেণুর উৎপাদন হয়েছে। যার দাম প্রায় এক কোটি টাকার উপরে।
এবার হালদা থেকে প্রাপ্ত ডিম গত বছরে চেয়ে তিন ভাগের এক ভাগ। দূষণের কারণে হালদায় মা মাছের ডিমের পরিমাণ কমে যাচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
হালদা থেকে ২০১৮ সালে ২২ হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৭ সালে এক হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৬ সালে ৭৩৫ (নমুনা ডিম) কেজি, ২০১৫সালে দুই হাজার ৮০০ কেজি এবং ২০১৪ সালে ১৬ হাজার ৫০০ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়েছিল।