ডিবির অভিযানের পর যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু: গ্রেফতার ২

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ডিবির অভিযানের পর যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু: গ্রেফতার ২

ডিবির অভিযানের পর যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু: গ্রেফতার ২

ময়মনসিংহে ডিবি পুলিশের অভিযানের পর ফয়সাল খান (৩০) মৃত্যুর ঘটনার দু'জনকে গ্রেফতার করে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার মোস্তফা হাবিবের ছেলে ফরহাদ তানভীর ওরফে তুষার (২৫), অপরজন একই উপজেলার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. কাউছার মিয়া (২৪)।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গ্রেফতারকৃত আসামিদের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে বিচারক রওশন জাহান তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্ধেশ দেন।

চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পরিদর্শক (ওসি) পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, কোতোয়ালি থানা পুলিশ গ্রেফতারকৃত আসামিদের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠালে বিচারক রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে কারাগারে পাঠানোের নির্দেশ দেন।

এর আগে গত শুক্রবার কক্সবাজারের লালদিঘী মোড় এলাকা থেকে দু'জনকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছে মামলা তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালী মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল হক।

তিনি বলেন, মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারের পর মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

নিহত ফয়সাল খান জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সরিষা কাশিপুর এলাকার মো. সেলিম খানের ছেলে। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করে নগরের কেওয়াটখালী পাওয়ার হাউস রোডে বড় বোনের বাসায় থেকে চাকরির জন্য চেষ্টা করছিলেন।

ফয়সালের স্বজনদের ভাষ্য, চার বছর ধরে ফয়সালের সঙ্গে একই এলাকার এক তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি তরুণীর সরকারি চাকরি হয়। এরপর অন্য আরেক জনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এতে ফয়সালের সাথে তরুণীর দূরত্ব তৈরি হয়। এদিকে, ওই তরুণী ও তার প্রেমিকের পরিবারের লোকজন তাদের বিয়ের দিনক্ষণ নির্ধারণ করেন। ফয়সাল বিয়েতে বাধা দিতে চাইলে তরুণীর বাবা ১ নভেম্বর পর্নোগ্রাফি আইনে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এরপরে গত ১০ নভেম্বর ডিবি পুলিশের কাছে একই অভিযোগ করেন ওই মেয়ের স্বজনরা। পরে ওই দিন রাত সাড়ে নয়টার দিকে ফয়সালের বোনের বাসায় অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। ডিবির অভিযানের সময় দুজন বহিরাগত সঙ্গে ছিলেন। ডিবি অভিযান চালিয়ে যাওয়ার পর বাসার সামনে ফয়সালকে অচেতন ও রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ১৫ নভেম্বর তার মৃত্যু হয়। একই দিনে গোপনে ওই তরুণীকে তার প্রেমিকের সাথে বিয়ে দেয়া হয়।

ফয়সালের আহত হওয়ার ঘটনায় ১২ নভেম্বর রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেন ফয়সালের বাবা সেলিম খান। এতে ওই তরুণীর বাবাসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে ছাদ থেকে ৬০ ফুট নিচে ফয়সালকে ফেলে দিয়েছে বলে মামলায় এজাহারে অভিযোগ করা হয়।

ডিবি পুলিশের অভিযানের পর রহস্যনজক মৃত্যুর ঘটনায় ১৭ নভেম্বর রাতে পুলিশ সুপার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। তবে, তদন্ত ৭ কার্য দিবস পেরিয়ে গেলেও প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি কমিটি। তদন্ত কাজ শেষ করতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শামীম হোসেন।