ঈদের ছুটির তৃতীয় দিনেও চট্টগ্রামের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ছিল দর্শনার্থীদের ভিড়। সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি কেন্দ্রগুলোতে নানা বয়সী মানুষের সমাগমে মুখর হয়ে ওঠে।
শুক্রবার (৭ জুন) দুপুরের পর থেকেই দর্শনার্থীরা বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ছুটেন পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের নিয়ে। বিশেষ করে শিশুদের বিনোদনের জন্য আগ্রাবাদের কর্ণফুলী শিশু পার্ক ও কাজীর দেউড়ী শিশু পার্ক রঙ করে নতুন করে সৌন্দর্য বর্ধন করা হয়েছে অনেক আগেই।
এছাড়াও নগরীর কাজীর দেউড়ি শিশু পার্ক, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, ফয়স লেক ও সী-ওয়ার্ল্ড, বহদ্দারহাটের স্বাধীনতা পার্ক, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, আগ্রাবাদের কর্ণফুলী শিশু পার্ক, বিমানবন্দর রোডের বাটারফ্লাই পার্ক, পারকি সমুদ্র সৈকত, গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে দর্শনার্থীদের ভিড় বেশি দেখা যায়।
স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ঈদের ছুটিতে ভিড় বেশি। আর তাই দর্শনার্থীদের বাড়তি চাপ সামাল দিতে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত খণ্ডকালীন কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
নগরীর কাজীর দেউড়ি শিশু পার্কের বেশিরভাগ রাইড শিশুদের জন্য রাখা হলেও, এই ভিড়ে পিছিয়ে নেই বড়রাও। ফলে এ সুযোগে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে চলছে লাভজনক ব্যবসা। এখানে শিশুরা টয় ট্রেন, ম্যাজিক নৌকা, আনন্দ ঘূর্ণি, ঝুলানো চেয়ার, ফুলদানি আমেজ, উড়ন্ত নভোযান রাইডগুলোতে চড়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
চার বছরের ছেলেকে নিয়ে শিশু পার্কে এসেছেন বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক মোনতাসির দেওয়ান। তিনি বার্তা২৪.কমকে জানান, সারাবছর চাকরি নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাতে হয়। পরিবারকে সময় দেওয়া হয়ে উঠে না। মেয়ের আবদার রাখতেই এখানে আসা।
বিনোদন প্রিয়দের কাছে পরিচিত ফয়স লেকে বাড়তি চাপ সামলাতে চিড়িয়াখানার গেইট দর্শনার্থীদের জন্য নয়টায় খোলা রাখছে কর্তৃপক্ষ। বিনোদন স্পটের এক কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বার্তা২৪.কমকে জানান, ঈদের দিন বিকেল থেকে দর্শনার্থীদের চাপ বেশি। অনেকে ভিড় করছেন এখানকার ওয়াটার পার্কেও।
অপরদিকে, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতেও দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়। সমুদ্রপারের দোকানগুলোতে ঈদ উপলক্ষে রয়েছে বিশেষ আয়োজন। ক্রেতাদের মন জয় করে শামুক ও ঝিনুকের তৈরি মালা ও শোপিসের পসরা নিয়ে দোকানিরা করছেন লাভজনক ব্যবসা। আগে গড়ে দুই থেকে তিনশো টাকার শোপিস বিক্রি হলেও এখন প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে হাজার টাকার শোপিস। পতেঙ্গা সৈকতের অদূরে নেভাল একাডেমীর আশপাশেও বসেছে মানুষের মিলনমেলা।
গাড়ি নিয়ে দূরদূরান্ত থেকে এসেছেন বিভিন্ন বয়সী নারী ও পুরুষ। একই এলাকায় বাটারফ্লাই পার্কেও চলছে ঈদ-উৎসব। সেখানেও দেখা গেছে, শিশুদের নিয়ে তাদের বাবা-মা ভিড় করেছেন। নানা রঙের, নানা প্রজাতির অসংখ্য প্রজাপতির ভিড়ে পার্কজুড়েই ছোটাছুটি করছে শিশুরা। পিছিয়ে নেই বড়রাও।
বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি প্রবেশের ক্ষেত্রে বাড়তি টাকা নেওয়ার অভিযোগও তোলেন অনেকে।