ফরিদপুরের সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলায় ডাকাতের গুলিতে গৃহকর্তাসহ তিনজন নিহত হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়েছে আরো দু’জন। গত ৮ নভেম্বর দিবাগত গভীর রাতে ও বৃহস্পতিবার ভোরে ডাকাতির ঘটনা ঘটনা দু’টি ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, চরভদ্রাসন উপজেলার মৃধাডাঙ্গী গ্রামের সামছেল ফকিরের ছেলে সোহরাব ফকিরের বিয়ের অনুষ্ঠান চলাকালে রাত ২টার দিকে হানা দেয় ১৫-২০ জনের ডাকাতদল। পদ্মানদীতে সি-বোটে আসা ডাকাতরা নদীর ঘাটে সি-বোট রেখে কয়েকশ গজ দূরের বিয়ে বাড়িতে হানা দেয়। এসময় তারা বিয়ে বাড়ির বাসিন্দা ও অতিথিদের স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোনসেটসহ মূল্যবান সম্পদ লুট করে।
ডাকাতের উপস্থিতি টের পেয়ে গ্রামবাসী তাদের পাকড়াও করে। এক পর্যায়ে তারা সি-বোট আটকাতে গেলে বোটে থাকা ডাকাত সদস্যরা গুলি চালায়। এতে চার গ্রামবাসী গুলিবিদ্ধ হয়। আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে জেহের মৃধার ছেলে মোঃ সাজ্জাদ মৃধা (৩০) ও আয়ান মৃধার ছেলে সেন্টু মৃধা (২৮) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গুলিবিদ্ধ অপর দু’জনের মধ্যে আলামিনের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
সামছেল ফকিরের বড় ছেলে ফরহাদ ফকিরের স্ত্রী মুক্তা বাংলাদেশের খবরকে জানান, রাত ২টার দিকে বিয়ের অনুষ্ঠানের নাচ-গান বন্ধ হলে তারা বাড়িতে যান এবং তিনি তার শোবার ঘরে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর বাইরে থেকে কিছু লোকজন তার ঘরের দরজা খুলতে বলে। বিয়ে বড়ির লোক ভেবে তিনি দরজা খুলে দিলে পাঁচ ডাকাত তার ঘরে ঢুকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তার সমস্ত স্বর্নলঙ্কার নিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, ডাকাতরা প্রথমে বাড়িতে থাকা পুরুষদের হাত-পা বেঁধে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে প্রায় ২০-২২ জন ডাকাত কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে প্রতিটি ঘরে থাকা বিয়ে বাড়ির অতিথিদের স্বর্নালংঙ্কারসহ প্রায় ৫০ ভরি স্বর্ণ ও নগদ অর্থ লুটে নিয়ে যায়। প্রতিবেশী আলহাজ মৃধার বাড়িতেও একই কায়দায় ডাকাতি হয় বলে জানান মুক্তা। তার ভাষ্য অনুযায়ী, ডাকাতরা দুটি বড়ি থেকে প্রায় ৩৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।
চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাম প্রসাদ ভক্ত জানান, নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ডাকাতিতে হতাহতের ঘটনায় দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল বলে জানান ওসি।
অপরদিকে, বৃহস্পতিবার ভোরে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের মুন্সিরচর গ্রামে ডাকাতের হামলায় একজন নিহত হয়েছে। নিহতের নাম আব্দুল মালেক (৩৫)।
সদরপুর থানার ওসি মো. হারুন অর রশীদ জানান, ভোরে একদল ডাকাত আব্দুল মালেক খাঁর (৩০) বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় ডাকাতদের প্রতিহত করার চেষ্টা করলে ডাকাতের অস্ত্রের আঘাতে গৃহকর্তা নিহত হয়।