আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের ঠাঁই হয়েছে বিদ্যানিকেতনে

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-30 12:29:35

শুক্রবারের (১৬ আগস্ট) আগুনে মিরপুর-৭ নম্বর সেকশনের ঝিলপাড়ের বস্তিবাসীর ঘর, জীবনের শেষ সম্বল সব পুড়ে ছাই হয়েছে। মাথাগোঁজার ঠাঁই হারিয়ে গত তিনদিন রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে খোলা আকাশে ছিল তাদের শেষ আশ্রয়। অবশেষে বাস্তুহারা সেই বস্তিবাসীদের ঠাঁই হয়েছে বঙ্গবন্ধু বিদ্যানিকেতন স্কুলে।
 
অস্থায়ী এই আশ্রয় কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, তাদের জন্য এখানে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি বেসরকারি এনজিওগুলো তাদের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করেছে। সেই সঙ্গে তাদের তত্ত্বাবধানে অসুস্থ বস্তিবাসীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব বস্তিবাসী, ঠাই হয়েছে বিদ্যানিকেতনে, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিনে মিরপুরের চলন্তিকা মোড় এলাকায় অবস্থিত এই বিদ্যানিকেতনে এমন চিত্র দেখা যায়। স্কুলের রুমগুলোতে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা করা হলেও তাদের চোখে মুখে ছিল আতঙ্ক। সব হারিয়ে নিঃস্ব তারা।

আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে রাস্তায় রাত কাটিয়েছেন ঘরপোড়া বস্তিবাসী

বিদ্যানিকেতনে আশ্রয় নেওয়া জলি খাতুন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'সেদিনের আগুনের ঘটনায় আমাদের পুরো পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। এখানে ছোট বাচ্চা নিয়ে আর কতদিনই বা থাকা যাবে। সরকার ঘরগুলো ঠিক করে দিলে আমরা আবার পরিবার নিয়ে সেখানে থাকতে পারব।’

কোথায় যাবেন, কই থাকবেন জানেন না তারা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

বিদ্যানিকেতনে আশ্রয় নেওয়া রবিউল ইসলাম অভিযোগ করে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'আমরা এই বিদ্যানিকেতনে থাকতে চাই না। এখানে থাকলে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। যদিও তিনবেলা খাবার দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কাপড় চোপড় নাই। খুব কষ্টে দিন যাপন করতে হচ্ছে। সরকারের কাছে আমরা অনুরোধ করছি আমাদের দ্রুত আর্থিক সহায়তা করে স্থায়ী থাকার ব্যবস্থা করে দিন।’

আরও পড়ুন: বস্তিতে অগ্নিকাণ্ড: বাতাসে এখনো পোড়া গন্ধ

ক্ষতিগ্রস্তদের একজন মুরাদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'চারদিন পার হয়ে গেলও সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আমাদের কোনো ধরনের আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের কোথায় থাকার ব্যবস্থা করা হবে। এমন অবস্থায় আমরা পুরোপুরি বাস্তুহারা হওয়ার মধ্যে পড়ে গেছি।’

আবারও ঘুরে দাঁড়াতে চান বস্তিবাসী, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীদের জন্য কাজ করা বেসরকারি এনজিও রিসোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টারের প্রকল্প পরিচালক বেবি রিটা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'আমরা আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া পরিবারগুলোর জন্য স্যানিটেশন ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করে থাকি। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা এখন পর্যন্ত কোনো ইঙ্গিত পাইনি তাদের কোথায় স্থায়ীভাবে থাকতে দেওয়া হবে। সেটা জানতে পেলে আমরা পুরোদমে কাজ করতে পারব।’

আরও পড়ুন: ২ ছেলেকে জড়িয়ে ধরে, পেছনে ফিরতেই সব পুড়ে শেষ!

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টা ২২ মিনিটে মিরপুরের এই বস্তিতে আগুনের ঘটনা ঘটেছিল। ফায়ার সার্ভিসের ২০ ইউনিটের তিন ঘণ্টা চেষ্টায় রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানা যায়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর