রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীন-জাপান-ভারতকে যুক্ত করতে হবে

ঢাকা, জাতীয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-27 15:57:18

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীন, জাপান ও ভারতকে যুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাজধানীর ব্র্যাক ইনে একটি বই উন্মোচন অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও কূটনীতিকরা এ আহ্বান জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোসাইড স্ট্যাডিজ সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর ইমতিয়াজ আহমেদের নতুন একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয় সেখানে।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, 'মিয়ানমার মনে করে তাদের পকেট তিনটি দেশ- চীন, জাপান এবং ভারত রয়েছে। রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য এ দেশগুলোর সঙ্গে আরও কৌশলগত পদ্ধতিতে বাংলাদেশের সঙ্গে জড়িত হওয়া দরকার।'

প্রফেসর ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, 'রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান এবং রাখাইন রাজ্যে তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারকে দুটি কাজ করতে হবে। তা হলো- বিদ্যমান আইনের সংশোধন এবং রাখাইনে একটি নিরাপদ অঞ্চল তৈরি করে চীন, জাপান এবং ভারত থেকে নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা।'

তিনি মিয়ানমারের সঙ্গে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, প্রযুক্তিগতভাবে এবং ভূ-রাজনৈতিক ফ্রন্টে আরও গভীরভাবে কাজ করার জন্য পাঁচটি বিষয়ের উপর জোর দেন।

তিনি বলেন, 'মিয়ানমারে কারা বিনিয়োগ করছেন, কারা নতুন চুক্তিতে স্বাক্ষর করছেন এবং মিয়ানমারের সঙ্গে লাভজনক ব্যবসা করছেন এবং আন্তর্জাতিকভাবে তাদেরকে বিশ্বব্যাপী অধিকার সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করছে তাদের চিহ্নিত করা দরকার। বিশ্বকে জানানো দরকার যে, তারা গণহত্যা করেছে এমন একটি দেশের সঙ্গে ব্যবসা করছে?'

তিনি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, গায়ক, কবি, নাগরিক সমাজের সদস্যদের রোহিঙ্গাদের পক্ষে কথা বলার আহ্বান জানান।

বহুমুখী চ্যালেঞ্জ এবং টেকসই সমাধানের বিষয়ে আলোচনা করার জন্য 'রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট: টেকসই সমাধান' শীর্ষক বইটি অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ, জেনোসাইড স্টাডিজ সেন্টার ও পিস অ্যান্ড জাস্টিস কেন্দ্র যৌথভাবে উন্মোচন করে।

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো, বাংলাদেশে কানাডার হাই কমিশনার বেনোইট প্রফন্টেন, বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ, শান্তি ও বিচার কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মনজুর হাসান, অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারা কবির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বক্তরা বলেন, 'মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে মোটেই গুরুত্ব দিচ্ছে না। মিয়ানমার এখন পর্যন্ত কেবল একটি নাটক পরিচালনা করছে। গত দুই বছরে এটি এক জরুরি অবস্থায় পরিণত হয়েছে। আশ্রয়দাতা বাংলাদেশের জন্য ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ, নিজের অর্থনীতির ওপর চাপ, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, সুরক্ষা, কূটনীতি এবং প্রত্যাবাসন জটিলতা, সঙ্কটকে বহুমাত্রিক করে তুলেছে। সব রকম প্রস্তুতি সত্ত্বেও, কোনো রোহিঙ্গা ২২ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাদের জন্মস্থানে ফিরে যায়নি।'

সর্বশেষ তালিকা মতে, বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে প্রায় ৫৫,০০০ রোহিঙ্গার নাম হস্তান্তর করেছে এবং এর মধ্যে প্রায় ৮০০০ যাচাই করা গেছে। প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য মিয়ানমার কেবল ৩,৪৫০ রোহিঙ্গাকে নির্বাচিত করেছিল। শেষ পর্যন্ত তারাও ফেরত যায়নি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর