রাজশাহীতে টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে ৫০ হাজার গাছ লাগাচ্ছে শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রাজশাহী | 2023-09-01 21:46:05

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় রাজশাহীর বাঘায় ১৪৬টি প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে ৫০ হাজার বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম শুরু করেছে।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাঘা মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহিন রেজা।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়েব উদ্দীন লাভলু, অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আরিফুল ইসলাম, উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবিএম সানোয়ার হোসেন, উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি আনজুল ইসলাম প্রমুখ।

উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি আনজুল ইসলাম জানান, গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে শিক্ষার্থীদের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে গাছ কেনার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে স্ব স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা শ্রেণীকক্ষে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন। এতে শিক্ষার্থীরা উদ্বুদ্ধ হয়।

তিনি আরও জানান, তারা ক্লাস ক্যাপ্টেনের কাছে টাকা জমা দেয়। যা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে শিক্ষক সমিতি উপজেলা প্রশাসনের কাছে জমা করে। ওই টাকা দিয়ে ৫০ হাজারেরও অধিক ফলদ, বনজ, ওষুধি ও কাঠের গাছের চারা কেনা হয়। যা সোমবারের অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে নিজ বাড়ির আঙিনা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দু’দিনের মধ্যে চারা রোপণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যার প্রাথমিক যত্নও শিক্ষার্থীরা নেবে।

এদিকে, টিফিনের টাকা দিয়ে গাছ লাগানোর এমন উদ্যোগে খুশি অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরাও। বাঘা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘স্যাররা, আমাদের বুঝিয়েছেন গাছ কেটে ফেলার ফলে পরিবেশের বিপর্যয় হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আবহাওয়া গরম হয়ে যাচ্ছে। তাই প্রত্যেকের গাছ লাগানো উচিত। এজন্য আমরা গাছ লাগাচ্ছি। গাছের গোড়ায় আমি নিয়মিত পানি দিয়ে বড় করে তুলবো।’

স্থানীয় অভিভাবক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আগে শিক্ষকরা বিভিন্ন চাঁদা দাবি করতেন। ১০ টাকা অথবা ২০ টাকা দিতে হয়। কিন্তু গাছের চারা কেনার জন্য টাকা চাওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম। আমার মেয়ে ১০ টাকা নিয়েছিল। সেটা সে স্কুলে জমা দিয়েছিল। যার ফলে দু’টো চারা পেয়েছে। বিকেলে সেটা বাড়ির পাশে লাগিয়েছে। মেয়েও খুব খুশি। আমাদেরও বিষয়টি ভালো লেগেছে।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহীন রেজা বলেন, ‘শিক্ষকদের সহায়তা ছাড়া এমন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। শিক্ষকরা আমাদের খুব ভালো রেসপন্স করেছে। শিক্ষার্থীরাও এ ব্যাপারে আগ্রহী। আশা করি রোপণকৃত চারার যত্ন নিয়ে শিক্ষার্থীরা বড় করবে। যা আগামী দিনে আবহাওয়ার বিপর্যয় ঠেকাতে সহায়তা করবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর