২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলা মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুর দেড়টায় আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে হলি আর্টিজান মামলার রায় নিয়ে ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, গুলশানের সেই সন্ত্রাসী হামলার সময় সেখানে ইতালি, জাপান ও বাংলাদেশের নাগরিকরা ছিলেন। এ ছাড়াও পুলিশ বাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যরা ছিলেন, যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে। সেই চেষ্টা করতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন তারা। মামলার ২১ জন আসামির মধ্যে ৫ জন অভিযানে নিহত হন। তারপর আরও আটজন পরে বিভিন্ন অভিযানে নিহত হন। বাকি আটজন আসামি ছিলেন, তার মধ্যে ৭ জনকে ফাঁসি ও মিজান নামে একজনকে খালাস দিয়েছে আদালত।
তিনি বলেন, এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এমন চাঞ্চল্যকর যে সব মামলা দেশের শিকড়ে গিয়ে ধাক্কা দেয়, সেগুলো দ্রুত শেষ করতে পারছি, সেটা সন্তুষ্টির কারণ। ২০১৬ সালে ১ জুলাই ঘটনার সময় প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় বলছিলেন অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এই রায়ের ফলে তার সত্যতা নিশ্চিত হয়েছে।
আসামির আইএসের টুপি পরিধান সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এই জবাব কি আমি দিতে পারি? সেটা তদন্ত করা হবে। তবে এই বিষয়ে জবাব দেয়া সম্ভব না। আমি মনে করি এর তদন্ত হওয়া উচিত। আমি প্রেস কনফারেন্স শেষ করেই এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলব।
আনিসুল হক বলেন, গত ডিসেম্বর থেকে এই মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। ২১১ জনকে সাক্ষী করে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছিল। তার মধ্যে প্রয়োজনীয় ১১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের মাধ্যমে বিচারিক আদালত আজ এই রায় দিয়েছেন। আমরা বিচার কার্যক্রম ও এই রায়ে সন্তুষ্ট। আর যে খালাস পেয়েছে সে কিভাবে খালাস পেল তার জাজমেন্ট দেখে নিই কী সাক্ষ্য প্রমাণ আছে, তারপর আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিদেশিদের মৃত্যুর ফলে যে ইমেজ সঙ্কট হয়েছে, এই রায়ের ফলে তা ফিরবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার মনে হয় আমরা সারা বিশ্বের কাছে প্রমাণ করতে পেরেছি যে, বাংলাদেশে এমন হত্যাকাণ্ড হলে তার বিচার অত্যন্ত দ্রুত হয় এবং সঠিক বিচার প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিচার সম্পন্ন হয়।
রায় বাস্তবায়ন সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এই মামলার রায়ে সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে, রায় ঘোষণার পরই ডেট রেফারেন্স হিসাবে সাতদিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে চলে যায়। আমার বিশ্বাস, দ্রুত পেপারবুক তৈরি করে হাইকোর্ট ডিভিশনে শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করতে পারব। পেপারবুক তৈরি করার দায়িত্ব সরকারের। এখানে বিচারিত কাজে আমি কোন হস্তক্ষেপ করছি না।