বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরিতে জড়িতদের বিষয়ে ফিলিপাইনের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বরে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় দু’দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের নিয়মিত আলোচনার ফোরাম ফরেন অফিস কনসালটেশন বা এফওসি’র বৈঠকে শেষে এসব জানান পররাষ্ট্র সচিব।
এই বৈঠকে ফিলিপাইনের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির সহকারী সচিব (সচিব পদ মর্যাদা) মেনার্ডো মন্টেইলেগরে। আর বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মাসুদ বিন মোমেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ফিলিপাইনের একটি চক্র বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮.২ কোটি ডলার চুরি করে। এর মধ্যে ১.৬ কোটি ডলার ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। বাকিটা এখনও উদ্ধার হয়নি।
মোমেন বলেন, এ ঘটনায় জড়িত ব্যাংককে ফিলিপাইন সরকার ২০ লাখ ডলার জরিমানা করেছে। বাংলাদেশেকে এ থেকে অর্থ দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে ফিলিপাইন। কারণ এটি যেহেতু তাদের দেশের আইনে করা হয়েছে তাই এ থেকে অর্থ পাবে না বাংলাদেশ।
ওই বৈঠকে কৃষি প্রযুক্তি, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণসহ পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। এফওসির আওতায় অনুষ্ঠেয় আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সব বিষয়ই এসেছে বলে জানা গেছে।
বৈঠকে পারস্পরিক সহযোগিতা বিষয়ক অন্তত ৪টি চুক্তির খসড়া বিনিময় হয়েছে।
মোমেন বলেন, চুরি জড়িত ব্যক্তিদের নিয়ে ফিলিপাইনের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য চাওয়া হয়েছে। তাদের পরিচয় এবং চুরি সংক্রান্ত আর্থিক তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। মামলার চার্জশিট দেওয়ার জন্য এটি আমাদের জানা প্রয়োজন। এখন পর্যন্ত প্রায় ৮২ মিলিয়ন ডলার চুরি হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৬ মিলিয়ন ডলার উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি অর্থ উদ্ধারে চেষ্টা চলছে।
এ ইস্যুতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা ও ফিলিপাইনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আলাদা বৈঠক করেছেন।
কত দিনে তথ্য দেবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সময় না দিলেও তারা তাদের বিচার বিভাগের কাছে রক্ষিত তথ্যগুলো চাইবে। এরপরে আমাদের দেবে।
তিনি বলেন, জরিমানার অর্থ বাংলাদেশ ফিলিপাইনের কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করেছে। এ দাবি আমরা করতেই থাকব। কিন্তু ঐ দেশের ব্যাংকিং আইনে এ জরিমানা করা হয়েছে বলে বাংলাদেশকে দিতে গেলে জটিলতা তৈরি হবে বৈঠকে জানিয়েছেন ফিলিপাইন।
এ ইস্যুতে ‘নিউইয়র্ক ও ম্যানিলাসহ বিভিন্ন জায়গায় মামলা চলছে। এটি একটি লম্বা প্রক্রিয়া। আমরা টাকা ফেরত আনতে চেষ্টা করছি। এটি একটি সাইবার ক্রাইম।
বাংলাদেশ ও ফিলিপাইন যদি এটি সমাধান করতে পারে তাহলে বিশ্বে তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
মোমেন জানান, রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ফিলিপাইনের কাছে বাংলাদেশ সহায়তা চেয়েছে। ফিলিপাইন আসিয়ানের সদস্য। সে হিসেবে রোহিঙ্গা ইস্যুটির সমাধান করতে তাদেরও গুরুত্ব রয়েছে।