লাল-সবুজ পোশাকে বিজয় দিবসের দিনটি উদযাপনের আগ্রহ নগরীর সব বয়সীদের মাঝেই লক্ষ করা যায়। তাই ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই দেশি ফ্যাশন হাউজগুলো নানা ধরনের বিজয় দিবসের পোশাক ক্রেতাদের মাঝে মেলে ধরতে ব্যস্ত সময় পার করেন। মাসের শুরুতে বিক্রি তেমন ভালো না হলেও শেষ সময়ে ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়ছে বলে জানান বিক্রেতারা। তবে বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার বিক্রিতে কিছুটা ভাটা পড়েছে বলেও মনে করছেন তারা।
ফ্যাশন হাউজগুলো পোশাকে ভিন্নমাত্রা দিতে গতানুগতিক লাল-সবুজের পাশাপাশি এবার সাদা রঙ কেউ অগ্রাধিকার দিয়েছেন। বছরের অন্যান্য সময় যেকোনো অনুষ্ঠানে নির্দ্বিধায় যেনো পরতে পারেন সে জন্যই তাদের এ আয়োজন। এছাড়া পোশাকে উঠে এসেছে মানচিত্র, পতাকা, কাব্য এবং সমগ্র বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবিও। অন্যান্য বয়সীদের তুলনায় শিশুদের পোশাক বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানান আজিজ সুপার মার্কেটের কয়েকজন বিক্রেতা।
দেশী দশে সিঙ্গেল কামিজ বিক্রি করছেন ১১০০- ২০০০ টাকার মধ্যে, শাড়ি ২০০০-৪০০০, থ্রিপিস ২৫০০-৩৫০০, টি-শার্ট ৩৫০-৫০০ টাকার মধ্যে। আজিজ সুপার মার্কেটে সিঙ্গেল কামিজ ৬৫০-১৫৫০, টি-শার্ট ২০০-৩৫০, শাড়ি ১১০০-২০০০, উত্তরীয় ৩৫০, শাল ৫৫০-৯৫০, বাচ্চাদের পোশাক ৬০০-১৫৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং মলের দেশী দশ, আজিজ সুপার মার্কেট সহ নগরীর কয়েকটি ফ্যাশন হাউস ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
দেশী দশের বসুন্ধরা শাখার রং ফ্যাশন হাউজের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মানিক জানান, শেষ সময়ে বেচাকেনা মোটামুটি ভালই হচ্ছে। এবার পোশাকে কিছুটা ভিন্নতা আনতে লাল-সবুজের পাশাপাশি সাদা রংকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। গতানুগতিক লাল-সবুজ পোশাকের ক্ষেত্রে ক্রেতাদের কিছুটা অভিযোগ ছিল বছরের অন্য সময়গুলোতে পরতে না পারায়, তাই এবার রঙের ক্ষেত্রে কিছুটা সচেতনতা অবলম্বন করেছি। এছাড়া সুতির পাশাপাশি লিনেন কাপড়ের পোশাক এবার বেশি রাখা হয়েছে। আর পোশাকে প্রতীক হিসেবে হাতে বন্দুক, বিজয় উল্লাস এই ধরনের থিম মাথায় রেখে ক্রেতাদের জন্য এবারের পোশাক তৈরি করেছি।
অঞ্জন'স-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার আলমগীর জানান, শেষ দিকে বিক্রি ভালোই হচ্ছে। প্রতিবছরের মতো এবারও বিজয় দিবস উপলক্ষে আলাদা কালেকশন রাখা হয়েছে। এবারের ফ্যামিলি কালেকশনগুলো আকর্ষণীয়। বাচ্চাদের পোশাকের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ একটু বেশি।
ক্রেতা তাহমিনা ইসলাম ও মশিউদ্দিন দম্পতি বলেন, চাকরি করার কারণে সময় হয়ে ওঠে না তাই যেকোনো দিবসের ঠিক দুই দিন আগে কেনাকাটা করি। আজ পরিবারসহ এসেছি স্বামী স্ত্রী একই রং এবং ছাপার পাঞ্জাবি ও থ্রি পিস কিনবো এবং খুঁজে পেলে বাচ্চাকেও তেমনই কিনে দেবো।
একই ছাদের নিচে দশটি ফ্যাশন হাউজের পোশাক দেখে কেনার সুযোগ থাকায় দেশী দশকে পছন্দের তালিকায় রাখেন এই দম্পতি।
আফিয়া রহমান নামে অপর এক ক্রেতা বলেন, আগে সময় করে উঠতে পারিনি তাই আজ ছুটির দিন থাকায় আজ এসেছি। ভাই বউয়ের জন্মদিন এবং বিজয় দিবস একের মধ্যে যেন দুই হয়ে যায় তাই লাল-সবুজ পোশাকই কিনবো। নিজের জন্যও এখনো কেনা হয়নি ঘুরে দেখছি।
মোহাম্মদপুর মডেল স্কুলের শিক্ষক প্রজায় কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে কথা হয় আজিজ সুপার মার্কেটে। তিনি বলেন, বিজয় দিবসে স্কুলে অনুষ্ঠান আছে তাই সহকর্মীরা একই রকম পোশাক এবং উত্তরীয় পড়বো। সে কারণে একসঙ্গে অনেকগুলো উত্তরীয় কিনতে এসেছি। দামে মিললে কিনে ফেলবো।
আজিজ সুপার মার্কেটের বিসর্গ ফ্যাশন হাউজের ম্যানেজার কাকন জানান, গত ২-৩ দিনে আমাদের বিক্রি অনেক ভালো হয়েছে। আমাদের কালেকশনগুলো আকর্ষণীয় তাই ক্রেতাদের আগ্রহ লক্ষ্য করেছি।