বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
এ সময় হামলাকারীরা পরিসংখ্যান কর্মকর্তার কার্যালয়ে তালা দিয়ে অফিসের চেইনম্যান শামসুজ্জামানকে আটকে রাখেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। পরে তালা খুলে তাকে উদ্ধার করেন বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাধবী রায়।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, জনশুমারির জন্য উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের মাধ্যমে বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ৩০০ কর্মী নিয়োগের জন্য ইউএনও কার্যালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।
সেই বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক ৩ জানুয়ারি ইউএনও কার্যালয়ে আবেদন প্রাপ্তদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। মেধা অনুযায়ী উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় গণনাকারী ও সুপারভাইজার নিয়োগ দেওয়া হয়। সাক্ষাৎকার শেষে প্রতিদিন নিয়োগ প্রাপ্তদের তালিকা উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের দেয়ালে লাগিয়ে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে বাকেরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম ডাকুয়া, সহ-সভাপতি আলকাস হোসেন, মো. দেলোয়ার হোসেন ও সোহেলসহ ১৫/২০ জন তালাবদ্ধ উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের সামনে গিয়ে টাকার বিনিময়ে বিএনপি-জামায়াতের লোকজনকে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ তুলে কর্মকর্তাকে গালিগালাজ করেন। এ সময় উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের চেইনম্যান শামসুজ্জামান অফিসের সামনে এলে তারা তার কাছ থেকে চাবি ছিনিয়ে নিয়ে তালা খুলে রুমের ভেতরে ঢুকে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেন এবং দেয়ালে টাঙানো জনশুমারির নিয়োগ প্রাপ্তদের নামের তালিকা ছিঁড়ে ফেলেন।
এছাড়া রুম থেকে বের হয়ে তারা চেইনম্যান শামসুজ্জামানকে রুমে ঢুকিয়ে তালাবদ্ধ করে চাবি ছুড়ে ফেলে দেন। পরে খবর পেয়ে ইউএনও গিয়ে তালা খুলে শামসুজ্জামানকে উদ্ধার করেন।
এ ব্যাপারে জানতে বাকেরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম ডাকুয়াকে ফোন দিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিলে ফোন কেটে দেন তিনি।
ইউএনও মাধবী রায় বার্তা২৪.কমকে জানান, সরকারি বিধি-বিধান অনুযায়ী মেধা মূল্যায়নের ভিত্তিতে যথাযথ প্রক্রিয়ার জনশুমারি গণনার জন্য জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগপ্রাপ্তরা কে কোন দলের তা জানা মূখ্য বিষয় নয়। উপজেলার ইউনিয়ন ও পৌরসভায় নিয়োগ প্রাপ্তদের মধ্যে কোনো অভিযোগ না থাকলেও হামলাকারীরা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে এ হামলা চালান। কোনো ধরনের দলমত বিবেচনা না করে যোগ্যতা ও মেধা অনুযায়ী পৌরসভায় ১০ জন গণনাকারী ও দুই জন সুপারভাইজারকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
পরিসংখ্যান অফিসে হামলা ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম বার্তা২৪.কমকে জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে দেখতে পায়নি। তবে অফিসের ভেতরে চেয়ার-টেবিলসহ অন্যান্য আসবাবপত্র এলামেলো অবস্থায় দেখা গেছে। ইউএনও এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নিলে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।