পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, রোহিঙ্গারা যে পাচারের শিকার হচ্ছে বা হবে, এ ঝুঁকিটা সব সময়ই ছিল। প্রত্যাবাসন যত দীর্ঘায়িত হবে, এ ঝুঁকিগুলোও থাকবে। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে নতুন কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, কাঁটাতারের বেড়া এখনও সব জায়গাতে দেওয়া হয়নি, কিছু জটিলতা আছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেখছে। আমরা প্রথম থেকেই বলেছি যে রোহিঙ্গাদের হাতে যেন বাড়তি কোনো পয়সা না থাকে। সেটা এখন আমরা নিয়ন্ত্রণ করছি। কেননা রোহিঙ্গাদের হাতে যখন বাড়তি পয়সা থাকবে, তখনই তারা পাচারকারীদের শিকার হবে। অতীতে আমরা দেখেছি যে শুধু বাংলাদেশ থেকেই নয়, রোহিঙ্গারা রাখাইন থেকেও পাচারের শিকার হচ্ছে। তাই এ পাচারের ঘটনা পুরোপুরি বন্ধ করা দুষ্কর। কেননা রোহিঙ্গাদের মধ্যেই পাচারকারীরা রয়েছে। এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ একটি ব্যবসা। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এ বিষয়ে আরো তৎপর হবে। আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, রোহিঙ্গা সংকট যত দীর্ঘায়িত হবে, এসব ঝুঁকি ততো বাড়বে। কেননা এখানে পাচারের সঙ্গে মাদকেরও একটা সংশ্লিষ্টটা রয়েছে। এ কারণে রোহিঙ্গা তরুণ বা নারীরাও খুব ঝুঁকিতে আছে। আর এসব ঝুঁকি বিবেচনায় রেখেই কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার বিষয়টি এসেছিল। এ বেড়া রোহিঙ্গাদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ নয় বরং তাদের নিরাপত্তার জন্যই করা হচ্ছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গারা যাতে গোটা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেটাও একটা বিষয়।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে এসব ঝুঁকির ক্ষেত্রে আমাদের আরো সতর্ক হতে হবে। আর সে কারণেই ভাষানচরে আমাদের বিকল্প যে ভাবনা রয়েছে, সেটা কাজে লাগাতে হবে। ভাষানচরে রোহিঙ্গারা ভালো থাকবে, এ ঝুঁকিগুলো সেখানে কম থাকবে। ভাষানচর প্রস্তুত হচ্ছে, আগামী পরশুদিন (শুক্রবার) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভাষানচর পরিদর্শনে যাবেন। ওই দিন আমরা সর্বশেষ অগ্রগতি সরেজমিন দেখব এবং আরো কি কি বিষয়ের উন্নতি করতে হবে, তা জানব।
টিআইবির প্রতিবেদন সম্পর্কে আমার জানা নেই। তাদের তথ্যের ভিত্তি কি আমরা জানি না। যেহেতু তাদের তেমন কোনো কাজকর্ম নাই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, রাতের অন্ধকারে সেখানে হয়তো কিছু মাদক পাচার বা মানবপাচার বা কিছু স্মল-আর্মস একবার-দুইবার পাওয়া গেছে। এগুলো আমরা যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। কিন্তু আমাদের তথ্য অনুযায়ী, রোহিঙ্গা শিবিরে কোনো সশস্ত্র দল বা কোনো জঙ্গি বাহিনী এমন কিছু করেছে বলে শুনিনি। এটা হওয়ার কথাও না।
পুরোপুরি পাচার বন্ধ করা জটিল। কেননা এর সঙ্গে রোহিঙ্গাও হয়ত জড়িত।