বায়ুদূষণ ও করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে রাজধানীতে বেড়েছে মাস্কের ব্যবহার। সতর্কতার জন্য অনেকেই এখন মাস্ক ব্যবহার করছেন। আর এই সুযোগেই হঠাৎ করে ব্যবসায়ীরা দামও বাড়িয়েছে দ্বিগুণ।
রাজধানীর গণপরিবহনে হকাররা নিম্নমানের যে মাস্ক বিক্রি করতো ৫-১০ টাকায়, এখন সেই মাস্ক বিক্রি করছে ২০-২৫ টাকায়। আর একটু ভালোমানের মাস্ক যেখানে বিক্রি হতো ১৫-২০ টাকায়, এখন ৪০-৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে মাস্কগুলো। রাজধানীর ফুটপাতের যে দোকানগুলোতে আগে মাস্ক বিক্রি হতো না, সেই দোকানগুলোতেই এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। আর একটু অভিজাত জায়গায় অর্থাৎ ফার্মেসিতে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়।
রাজধানীর বাড্ডার হকার মিন্টু মিয়া বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমি মাস্ক বিক্রি করতাম না। গত ১৫-২০ দিন ধরে মাস্ক বিক্রি করি। তিনি বলেন, দিনে ৩০-৪০ পিস বিক্রি হয়। তিনি প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা কখনো ১০টা পর্যন্ত বিক্রি করেন। ব্যবসা কেমন হচ্ছে উত্তরে তিনি বলেন, ‘ভালই’।
মহাখালীর জুয়েল ফার্মেসির কর্ণধার বার্তা২৪.কম-কে জুয়েল বলেন, শহরে বায়ুদূষণ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি করোনাভাইরাসের ভয়ে এখন মাস্কের চাহিদা বেড়েছে। এর সঙ্গে বেড়েছে বিক্রিও।
বাইকচালক মুকিত আব্দুল্লাহ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমি ধুলা-বালির কারণে মাস্ক ব্যবহার করি। এক সপ্তাহে একটি মাস্ক ব্যবহার করেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন মাস্কের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ২০ টাকার মাস্ক এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।
এক গবেষণায় দেখা গেছে রাজধানী ঢাকা দূষিত বাতাসের শহরের র্যাঙ্কিংয়ে বর্তমানে নিয়মিতভাবেই উপরের দিকে থাকছে। এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) অনুযায়ী গত এক সপ্তাহ ধরেই বায়ু দূষণে ঢাকা প্রথম থেকে সপ্তম স্থান অধিকার করছে। যা আমাদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার বিষয়। প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের জন্য কোন ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে তা জানায়। একিউআই সূচকে ৫০ এর নিচে স্কোর থাকার মানে হলো বাতাসের মান ভালো। একিউআইতে ৫১ থেকে ১০০ স্কোর থাকার মানে হলো বাতাসের মান গ্রহণযোগ্য। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর থাকার অর্থ হচ্ছে বাতাসের মান দূষিত। তবে ঢাকায় বায়ু দূষণের মাত্রা এখন নিয়মিত ১৭৫ থেকে ২৫০ স্কোর থাকছে।
অন্যদিকে ছোঁয়াচে রোগ করোনাভাইরাসের কারণে এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার মানুষ মারা গেছে চীনে। আক্রান্তের সংখ্যা পৌনে ১ লাখ ছাড়িয়েছে। চীন থেকে উৎপত্তি হওয়া করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে।
আর এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। যার ফলে হঠাৎ করে বাজারে মাস্কের চাহিদা বেড়ে গেছে এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দাম।