যৌতুক না দেওয়ায় রংপুরে প্রভাষক স্বামীর বিরুদ্ধে স্কুলশিক্ষিকা স্ত্রীকে অমানবিক নির্যাতন ও সংসার না করার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় ন্যায় বিচারের আশায় আদালতে মামলা করলে বিভিন্নভাবে হুমকি ও ভয়ভীতির শিকার হচ্ছেন ওই নির্যাতিতা শিক্ষিকা।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গঙ্গাচড়ার মধ্য কচুয়া বাবুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আদুরী বেগম এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ২০১৭ সালে রংপুর নগরীর উত্তম স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক কামাল হোসেনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তার। বিয়ের পর কয়েক লাখ টাকার আসবাবপত্র স্বামীর গৃহে নিয়ে যান। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে যৌতুক হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে তার স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি শারীরিক-মানসিক নির্যাতন চালায়। এক পর্যায়ে যৌতুকের তিন লাখ টাকা দিলেও পরে আরও দুই লাখ টাকা দাবি করে স্বামী। টাকা দিতে না পারায় স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন বেধড়ক মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় এবং ডিভোর্স দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আদালতে মামলা করলে শ্বশুর বাড়ির লোকেরা প্রাণনাশের হুমকিসহ নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে বলে জানায় ভুক্তভোগী স্কুলশিক্ষিকা।
দ্রুত এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসহ আদালতের কাছে ন্যায় বিচার দাবি করেন আদুরী বেগম। আমার বাবা নেই। আমার পরিবারের লোকজন অসহায়। আমি মামলা দায়ের করে এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এদিকে এসব অভিযোগকে মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেছেন উত্তম স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক কামাল হোসেন। তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার পাশাপাশি এখন ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। আদালতে মামলা চলমান থাকায় আমি বেশি কিছু বলতে চাই না।
অন্যদিকে গঙ্গাচড়ার বড়বিল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আফজালুল হক রাজু জানান, গত বছরের সেপ্টেম্বরে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আদালত থেকে তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। বিষয়টি স্থানীয়দের পাশাপাশি ঘটনার সাক্ষী ও উপস্থিত লোকজনের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিক তদন্তে শিক্ষক কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী আদুরী বেগমের আনীত অভিযোগগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়। যা পরবর্তীতে আদালতকে তদন্ত প্রতিবেদন আকারে অবগত করা হয়েছে।