করোনার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের ফ্লাইট বাতিলের পরিকল্পনা নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-19 08:07:51

করোনাভাইরাসের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের কোনো ফ্লাইট বাতিলের পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত কর্তৃক করোনাভাইরাসের কিটস হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এসময় স্বাস্থ্য সচিব আসাদুল ইসলাম, চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে ফ্লাইট বাতিলের কোনো চিন্তা ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে ইরানসহ মধ্যপ্রাচ্যের কোন ফ্লাইট বাতিলের পরিকল্পনা নেই। আমরা সবাইকে সচেতন করেছি । ইতিমধ্যে ফ্লাইটের সংখ্যা সব দেশেই কমে গেছে। লোকজন চলা ফেরা কমিয়ে দিয়েছে। এতে করে পর্যটন শিল্প সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর অর্থ হলো লোকজন নিজেরাই চলাচল কমিয়ে দিয়েছে। আমরা ফ্লাইট বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেইনি।

করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য চীন বাংলাদেশকে ৫০০ কিটস দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের নিজেদেরও ২ হাজার কিটস রয়েছে। সব মিলিয়ে আড়াই হাজার কিটস হলো। কিটসের কোনো অভাব হবে না। আরও পাইপলাইনে আছে। আমরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী খুঁজবো না। আমরা এ ভাইরাস ঠেকানোর প্রস্তুতি নিয়েছি। এছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য ঢাকা কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যদি দেশে এ ধরনের রোগী পাওয়া যায় তাহলে সেখানে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া যাবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে সারাবিশ্ব আতঙ্কে রয়েছে। এ পর্যন্ত ২৩টি দেশে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। প্রায় ৮০ হাজার রোগী রয়েছে। আর মৃত্যুবরণ করেছে চীনসহ অন্যান্য দেশে ২৬১৮ জন। আমাদের দেশে এ পর্যন্ত ৩ লাখের মতো লোক পরীক্ষা করিয়েছে। যারা আমাদের বিভিন্ন নৌবন্দর, স্থলবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করেছে তাদের সকলকে পরীক্ষা করা হয়েছে। আমাদের দেশের জন্য সুখবর হলো এখন পর্যন্ত কোনো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়নি। আমরা সকল ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছি। আমাদের পরীক্ষা ও চিকিৎসা দেওয়ার সম্পূর্ণ ব্যবস্থা রয়েছে। এর থেকেও ভালো খবর হলো চায়নাতেও করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। আগে আড়াই হাজার ছিল এখন কমে ৪০০ নিচে নেমে এসেছে। তবে মৃত্যুর সংখ্যা এখনও বাড়তেছে। তবে দুঃসংবাদ হলো মধ্যপ্রাচ্যের ইরান, ইরাকসহ অন্যান্য দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।

তিনি বলেন, আমরা কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমাদের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র চীনের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা কিছু মেডিকেল জিনিসপত্র দিয়েছি। তার ধারাবাহিকতায় চীন সরকার বাংলাদেশকে শুভেচ্ছা স্বরূপ ৫০০টি টেস্টিং কিটস দিয়েছে।

জাহিদ মালেক বলেন, কিটসের পাশাপাশি আজ চীন একটি ট্রিটমেন্ট প্রটোকলও দিয়েছে। চীনের বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে তারা এটা তৈরি করেছেন। আমরা এটা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে দায়িত্বরত ডাক্তারদের কাছে পৌঁছে দেবো এবং সেই অনুযায়ী যাতে তারা চিকিৎসা সেবা দিতে পারে ও শিখতে পারে। যাতে বাংলাদেশে যদি কোন সময় এ ধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত হয় তখন তারা এই প্রটোকল অনুসরণ করে চিকিৎসা সেবা দিতে পারবে। এজন্য আমি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে টীনের রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে সেদেশের সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

একটি টেস্টিং কিটস দিয়ে কতজনকে পরীক্ষা করা যাবে ও এ পর্যন্ত কতজনকে পরীক্ষা করানো হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি কিটস দিয়ে একজনকেই পরীক্ষা করানো যাবে। দেশে এ পর্যন্ত কিটস দিয়ে ৭৯ জনকে পরীক্ষা করানো হয়েছে। আমাদের দেশের জন্য ২ হাজার যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে। পাইপলাইনে আরো আছে। এখনকার জন্য এটা যথেষ্ট।

মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে করোনা রোগী পাওয়া যাচ্ছে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের গবেষণা ও প্রস্তুতি কেমন রয়েছে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে কীভাবে গিয়েছে সেটাতো আমি বলতে পারবো না। তবে করোনা একজনের মাধ্যমে অন্যজনের কাছে ছড়ায়। নিশ্চয় তাদের ওখানে এধরনের কোন ঘটনা ঘটেছে সেটা তারা জানে না। তারা সেটা আস্তে আস্তে বের করে ফেলবে। আমাদের প্রতিটি বিমান, নৌবন্দর ও স্থলবন্দরে ডাক্তারদের টিমসহ স্ক্যানিং মেশিন, জ্বর মাপার যন্ত্র আছে। একই সঙ্গে প্রাথমিক করেনটাইন করারও ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া আমাদের সব জেলা হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ডিসি এসপিসহ প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের এমন ব্যবস্থা করা আছে। যাতে দেশের কোথাও এ ধরনের রোগী দেখা দিলে সাথে সাথে আমরা খবর পেয়ে যাচ্ছি। ঢাকা কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালকে শুধু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যদি দেশে এ ধরনের রোগী পাওয়া যায় তাহলে সেখানে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া যাবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর