আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বাংলার বাতাসে আবারও চক্রান্তের গন্ধ ভাসছে। স্বাধীনতাবিরোধী অশুভ শক্তি নতুন করে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। এই অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে।’
রোববার (১ মার্চ) দুপুরে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠে মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বিএনপিকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। কিন্তু নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি চক্রান্ত করে সরকার হটানোর ষড়যন্ত্র করছে। দেশে আর যেন কোনো দিন সাম্প্রদায়িক শক্তি, অন্ধকারের শক্তি ক্ষমতায় না আসতে পারে সে জন্য আওয়ামী লীগকে আজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
আওয়ামী লীগে কর্মী কমছে, নেতার সংখ্যা বাড়ছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের এতো নেতা দরকার নেই। আমাদের আজকে সাচ্চা কর্মী দরকার। মঞ্চের দিকে তাকালেই বোঝা যায় যে কত নেতা! নেতার অভাব নেই। বিলবোর্ডে সুন্দর সুন্দর ছবি দেখাবেন, লোকে চেনেও না! উনি বিলবোর্ডে উজ্জ্বল। এসব দেখতে পাওয়া যায়।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পকেট কমিটি করে আওয়ামী লীগকে দুর্বল করবেন না। পকেটের লোকদের নিয়ে কমিটি করলে আওয়ামী লীগ সুবিধাবাদীদের হাতে চলে যাবে। মশারির ভেতর মশারি টাঙাবেন না। আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ আছে। কঠিন চ্যালেঞ্জ আমাদের অতিক্রম করতে হবে। ত্যাগী নেতাকর্মীকে নিয়ে আওয়ামী লীগকে ঢেলে সাজাতে হবে।
কাদের বলেন, আমরা মুজিব বর্ষে আওয়ামী লীগে সুবিধাভোগী সন্ত্রাসীকে জায়গা দেব না। নেতা হতে হলে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। মনে রাখতে হবে ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে ভোগের লিপ্সা ত্যাগ করে আমাদের সত্যিকারের মুজিব সৈনিক হতে হবে। বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া আদর্শের পতাকা নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে বেলুন, ফেস্টুন ও কবুতর উড়িয়ে নগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত আছেন আওয়ামী লীগের রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন।
বিশেষ অতিথি আছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ড. আবদুল খালেক, ড. সাইদুর রহমান খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠাণ্ডু ও বেগম আখতার জাহান।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করছেন রাজশাহী নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। অতিথি হিসেবে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারা, রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৪ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক ও রাজশাহী-৫ আসনের এমপি ডা. মুনসুর রহমান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করছেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার।
দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। তবে ভোট না হওয়ায় সিলেকশন কমিটি ঘোষণা করা হয়। অধিবেশনে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা করে ওবায়দুল কাদের আগের কমিটির দু’জনকে বহাল রেখে নতুন কমিটি ঘোষণা করেন।
সভাপতি হিসেবে পুনরায় মনোনীত হন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ডাবলু সরকার। নতুন কমিটির সভাপতি-সম্পাদককে আগামী এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার নির্দেশ দেয়া হয়।