অসুস্থ শিশুকে স্কুলে না পাঠানোর নির্দেশনা ইউনিসেফের

বিবিধ, জাতীয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 12:32:14

শিশুদের শারীরিক সুস্থতার দিকে নজর রাখা এবং অসুস্থ হলে তাদের স্কুলে যেতে না দিয়ে বাড়িতে রাখার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে ইউনিসেফ।

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ থেকে শিশুদের রক্ষা এবং বিদ্যালয়কে নিরাপদ রাখতে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ (আইএফআরসি), ইউনিসেফ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বুধবার (মার্চ ১১) নতুন নির্দেশনা দিয়েছে।

বিদ্যালয়কে নিরাপদ রাখতে জরুরি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ওই নির্দেশনায়। শিক্ষাগত সুযোগ-সুবিধার জন্য কীভাবে জরুরি পরিকল্পনা গ্রহণ এবং প্রয়োগ করতে হবে সে বিষয়ে জাতীয় ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে নির্দেশনাটিতে।

পিতামাতা এবং সেবাদানকারীদের পাশাপাশি শিশু এবং শিক্ষার্থীদের নিজেদের জন্য সহায়ক টিপস এবং যাচাই তালিকা সরবরাহ করা হয়েছে নতুন এই নির্দেশিকায়। এসবের মধ্যে রয়েছে, শিশুদের শারীরিক সুস্থতার দিকে নজর রাখা এবং অসুস্থ হলে তাদের স্কুলে যেতে না দিয়ে বাড়িতে রাখা, শিশুদের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে এবং তাদের উদ্বেগগুলো প্রকাশ করতে উৎসাহিত করা এবং কোনও টিস্যুপেপার বা নিজের কনুই দিয়ে ঢেকে কাশি বা হাঁচি দেওয়া এবং নিজের মুখমন্ডল, চোখ, মুখ এবং নাক স্পর্শ না করা।

স্কুল বন্ধের ক্ষেত্রে, শিশুদের পড়াশোনার এবং সুস্থতার ওপর সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব কমানোর সুপারিশ দেওয়া হয়েছে ওই নির্দেশিকায়। এর অর্থ হলো— অনলাইন শিক্ষার কৌশল ও শিক্ষার বিভিন্ন বিষয়কে বেতারের মাধ্যমে সম্প্রচারের মতো দূরবর্তী শিক্ষণ পদ্ধতিসহ শিক্ষার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা, এবং সকল শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় সেবাসমূহের সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য দৃঢ় পরিকল্পনা গ্রহণ করা। এছাড়াও, স্কুলগুলো পুনরায় খোলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের বিষয়টিও এই পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত।

যেসব অঞ্চলে স্কুল এখনও খোলা আছে, সেসব জায়গায় যাতে শিশু এবং তাদের পরিবার সুরক্ষিত থাকে এবং তারা যেন জরুরি বিষয়গুলো সম্পর্কে অবহিত থাকে তা নিশ্চিত করার কথা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে। সেগুলো হলো— শিশুরা কীভাবে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারে সে সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করা, সর্বোত্তম পদ্ধতিতে হাত ধোয়া ও স্বাস্থ্যবিধি বা হাইজিন অনুশীলন পদ্ধতি প্রচার করা ও হাইজিন পণ্য সরবরাহ করা, স্কুল ভবনগুলো, বিশেষত পানীয় এবং স্যানিটেশন সুবিধাসমূহ, পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করা এবং বাতাসের প্রবাহ ও অবাধ চলাচল বৃদ্ধি করা।

ইতোমধ্যে যেসব দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিশ্চিত হয়েছে, সেসব দেশ ছাড়াও অন্যান্য সকল ক্ষেত্রেই এই নির্দেশিকা প্রাসঙ্গিক হবে। স্কুলে ও নিজেদের বাড়িতে এবং শিক্ষার্থীদের কমিউনিটিতে ভাইরাসটির বিস্তার রোধ ও নিয়ন্ত্রণ করতে শিক্ষার্থীদের দূত হিসাবে কাজ করতে উৎসাহিত করতে বলা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা অন্যদের সাথে সাথে রোগটির প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কথা বলার মাধ্যমে একাজটি করতে পারে।

বন্ধের পরে নিরাপদ স্কুল কার্যক্রম পরিচালনা করা বা বন্ধের পরে পুনরায় স্কুল খোলার জন্য অনেকগুলো বিষয় বিবেচনার প্রয়োজন হয়। এসব কার্যক্রম যদি ভালোভাবে পরিচালনা করা যায়, তা জনস্বাস্থ্যের জন্য সুফল বয়ে আনবে।

উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ইবোলা ভাইরাসজনিত রোগের প্রাদুর্ভাবের সময় গিনি, লাইবেরিয়া ও সিয়েরালিওনে নিরাপদ স্কুল নির্দেশিকাগুলো কার্যকর করা হয়েছিল, যা স্কুল-ভিত্তিক ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সহায়তা করেছিল।

স্কুলগুলো খোলা থাক বা দূরবর্তী শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করা হোক - সকল ক্ষেত্রেই শিক্ষার্থীদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের বিষয়ে ইউনিসেফ স্কুলগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

শিশুদের নিজেদের এবং তাদের পরিবারকে রক্ষার জন্য হাত ধোয়া ও অন্যান্য পদক্ষেপগুলোর বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য স্কুলগুলিতে সরবরাহ করা উচিত। এছাড়াও স্কুলগুলোর উচিত মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদান করা; শিক্ষার্থীদের একে অপরের প্রতি সদয় আচরণ করতে উৎসাহিত করা এবং ভাইরাসটি সম্পর্কে কথা বলার সময় গৎবাঁধা চিন্তা এড়াতে কুসংস্কার ও বৈষম্য রোধে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর