প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা মোকাবিলায় সার্কভুক্ত দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। মোদিকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, কেননা তিনি সার্কভুক্ত দেশের নেতৃবৃন্দকে এক করেছেন।
রোববার (১৫ মার্চ) বিকেলে সার্কভুক্ত দেশের সরকার প্রধান ও তাদের প্রতিনিধিদের ভিডিও কনফারেন্সে এসব কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনা মোকাবিলায় আমরা তিনটি কমিটি করেছি। আমাদের দেশে যারা করোনায় আক্রান্ত তারা দেশের বাইরে থেকে এসেছেন। আমরা আমাদের হাসপাতাল প্রস্তুত রেখেছি। দেশের প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে আলাদা বেড রাখা হয়েছে। নার্স ও ডাক্তার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা করোনা মোকাবিলায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছি। আমাদের স্কুলগামী শিশুদের মধ্যেও সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। একই সঙ্গে মিলে এ রোগ মোকাবিলা করতে হবে। সার্কভুক্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও সচিবরাও এ ধরণের ভিডিও কনফারেন্স করতে পারে।
যারা বিদেশ থেকে দেশে আসছেন, তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে। মহামারি করোনা যাতে দেশব্যাপী না ছড়ায় সেক্ষেত্রে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি- যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আয়োজিত ভিডিও কনফারেন্সে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, আমরা করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেব, কিন্তু আতঙ্ক সৃষ্টি করব না।
তিনি বলেন, সার্ক অঞ্চলে বিশ্বের পাঁচ ভাগের একভাগ মানুষ বাস করে। সবাই খুব ঘনিষ্ঠভাবে বাস করে। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ভারতের অভিজ্ঞতা শেয়ার করব। আমরা প্রস্তুতি নেব, কিন্তু আতঙ্ক সৃষ্টি করব না।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ভারত সরকারের নেওয়া সতর্কতামূলক পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে নরেন্দ্র মোদি আরও বলেন, ভারত ধীরে ধীরে পদক্ষেপ নিয়েছে। ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, ৬৬টি ল্যাব তৈরি করা হয়েছে। চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
ভিডিও কনফারেন্সে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রপতি আশরাফ গনি বলেন, আমরা গরিব দেশ, আমাদের একসঙ্গে এই সংকট মোকাবিলা করতে হবে। এ সময় ভিডিও কনফারেন্স আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানান আফগান রাষ্ট্রপতি।
এরপর মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহম্মদ সোলি বলেন, একা কোনো দেশ এটিকে মোকাবিলা করতে পারবে না। মালদ্বীপে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ৩০ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে একজনেরও মৃত্যু হয়নি। সবাইকে কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়েছে। অনেক মানুষ মালদ্বীপে বেড়াতে আসে। কেউ এসে অসুস্থ বোধ করলে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। করোনাভাইরাসের সংকট যে কোনো সময়ের চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, মালদ্বীপের অর্থনীতি পর্যটনখাতের ওপর নির্ভরশীল। এই সংকটের ফলে আমাদের ক্ষতি হয়েছে। চীন ও ইউরোপের পর্যটক না আসায় বেশি ক্ষতি হয়েছে। ৪৫০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে মালদ্বীপ।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাভায়া রাজাপক্ষে বলেন, আমাদের অনেক মানুষ ইতালি ও দক্ষিণ কোরিয়ায় কাজ করেন। তাদের দেশে আসতে বাধা দিতে পারি না। তবে তারা এলে বাধ্যতামূলক কোয়ারান্টাইনে রাখা হচ্ছে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম কমিয়ে আনা হয়েছে। কেউ এখানে মারা যায়নি। তবে কিছু ইতালিয়ান পর্যটকের মারফতে কিছু সংক্রমণ হয়েছে। দেশে জাতীয় টাক্সফোর্স গঠন করা হয়েছে যে কোনো জরুরি সিদ্ধান্ত নিতে।