প্রকৃতিতে সুখের ঘ্রাণ!

রংপুর, জাতীয়

ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর | 2023-08-31 09:01:19

‘আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা/ ফুল তুলিতে যাই, ফুলের মালা গলায় দিয়ে/ মামার বাড়ি যাই। ঝড়ের দিনে মামার দেশে/ আম কুড়াতে সুখ, পাকা আমের মধুর রসে/রঙিন করি মুখ...।’

পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের ‘মামার বাড়ি’ কবিতার পংক্তিগুলো বাস্তব রূপ পেতে বাকি আর মাত্র কয়েক মাস। সবুজে ভরা প্রকৃতিতে সুখের ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে।

মধু মাসের স্বাদ বাড়াবে রসালো কাঁঠাল

শহরে-গ্রামে আম গাছে দুলছে মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। আমের মুকুল আর মৌ মৌ গন্ধে চারিদিকে যেন রোমাঞ্চকর আবেশ। মাতাল গন্ধ মনকে বিমোহিত করছে। কাছে টানছে ডানা মেলা পাখিকেও।

থোকায় থোকায় হাসছে লিচুর মুকুল

আমের মতো মুকুল এসেছে রসালো লিচুর গাছেতেও। থোকায় থোকায় মুকুলের জটলার আভাসে শোনা যাচ্ছে মধু মাসের আগমনী বার্তা। আম, কাঁঠাল, জাম, লিচু, পেয়ারাসহ নানান ফলের ফুল আসছে গাছে গাছে। বিশেষ করে আম ও লিচুর মুকুল আর কাঁঠালের কুঁড়ি নজর কাড়ছে সবার।

গ্রামে-গঞ্জে, শহরে-বন্দরে সবখানে এবার মুকুল হাসছে। মুকুল ভাসছে। ছোট বড় সব আম ও লিচু গাছ ভর্তি মুকুল নিয়ে চাষিদের আনন্দের সঙ্গে আছে শঙ্কাও। প্রকৃতির বিরূপ আচরণ শুরু হলে ঝরে যেতে পারে এসব মুকুল।

আম গাছের ডালপালা জুড়ে মুকুলের ছড়াছড়ি

রংপুর জেলার পীরগঞ্জ পৌরসভা এলাকার আরাজী গঙ্গারামপুর গ্রামের আবুল কালাম আজাদ। বাড়ির পাশে ছোট্ট পরিসরে হাড়িভাঙ্গা আমের বাগান করেছেন। তার বাগানের গাছে গাছে এখন মৌমাছি নেচে গেয়ে সুখে মেতেছে। মুকুলের মাতাল করা গন্ধে আনন্দিত আজাদ জানান, বাগানের প্রত্যেকটা গাছ মুকুলে ছেয়ে গেছে। এখন শুধু ভয় হচ্ছে আবহাওয়া নিয়ে।

অন্যদিকে পীরগাছার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ব্রাক্ষ্মণীকুন্ডা বগুড়াপাড়া গ্রামের আমজাদ হোসেন জানালেন, তার বাড়ির সবকটা লিচু গাছ মুকুলে ভরে গেছে। আম গাছের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রচুর পরিমাণে ফল পাওয়া যাবে।

মুকুল এসেছে জামরুল গাছে

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, গতবারের চেয়ে তুলনামূলক গাছে বেশি মুকুল এসেছে। বিশেষ করে আম আর লিচু গাছে ভালো মুকুল দেখা গেছে। অবশ্য আগাম ঝড় বৃষ্টিতে মুকুল ঝরে না গেলে ফলের উৎপাদন আশানুরূপ হবে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বার্তা২৪.কম বলেন, ঝড় বৃষ্টিতে মুকুল ঝরে পড়া রোধসহ ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে বাগান মালিক ও চাষিদের নিয়মিত স্প্রে, কীটনাশক ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত ফল উৎপাদন চাহিদা নির্ধারণ করা হয়নি। তবে মুকুলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এবার রংপুর অঞ্চলের ফল বাগানের মালিক ও চাষিরা লাভবান হবেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর