বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনার সংক্রমণ রোধে দেশে চলছে অঘোষিত লকডাউন। সাধারণ ছুটির সাথে সঙ্গরোধে (কোয়ারেন্টাইন) থাকতে দেওয়া হয়েছে সরকারি নির্দেশনা। উদ্ভূত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে মাঠে কাজ করছে সেনাবাহিনী। এত কিছুর পরও হাট বাজারে লোকসমাগম কমছে না। বরং দিনকে দিন ঘর থেকে বের হওয়া মানুষের সংখ্যার সাথে বাড়ছে করোনার ঝুঁকি।
সাধারণ ছুটির ষষ্ঠ দিনে মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) রংপুর নগরীসহ বিভিন্ন উপজেলার হাট-বাজারে অগণিত মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সড়কে বেড়েছে ছোট-বড় যানবাহন চলাচল। সামাজিক দূরত্ব না মেনে চলাফেরা করছেন বাইরে আসা লোকজন।
বিশেষ করে বিকেলের পর থেকে বেশির ভাগ হাট-বাজার ভরে উঠছে বিভিন্ন বয়সী মানুষের উপস্থিতিতে। ছুটির শুরুর দিকে দোকানপাট বন্ধ থাকলেও গত দুই দিন থেকে দোকান খুলতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। প্রশাসনের বিধি নিষেধকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নির্ভয়ে বেচাকেনা চলছে সবখানে।
মঙ্গলবার বিকেলে গঙ্গাচড়ার লক্ষীটারী ইউনিয়নের সিরাজুল মার্কেটে দেখা গেছে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। বাইরে বের হওয়া এসব মানুষের বেশির ভাগই মাস্ক পরিহিত নয়। সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে ঘোরাফেরা আর আড্ডা জমেছে হাটের হোটেলগুলোতে।
একই চিত্র দেখা গেছে, বদরগঞ্জ উপজেলার হাট-বাজারেও। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নিরাপদ দূরত্ব নিশ্চিত করতে রঙ দিয়ে মার্কিং করে দিলেও ক্রেতা সাধারণরা নির্দেশনা মানছে না।
এই উপজেলার ইউনিয়নগুলোর কাঁচাবাজার, খাবারের দোকান, ওষুধের দোকান ও মুদি দোকান খোলা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বদরগঞ্জ পৌর এলাকার রাস্তাঘাটে আগের মত স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে লোকজনের চলাফেরা।
বিশ্বজুড়ে প্রাণঘাতী করোনার থাবায় যখন আক্রান্ত মানুষের সাথে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। তখন এমন অবাধ বিচরণ কোনোভাবেই নিরাপদ নয় বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
হাট-বাজারে গাদাগাদি ভাবে চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে করোনার সংক্রমণ থেকে সহসাই ঝুঁকিমুক্ত হওয়া যাবে না দাবি করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় রংপুরে গঠিত নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ ফখরুল আনাম বেঞ্জুর। তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘সচেতনতার অভাব থেকেই মানুষজন এখনো বাইরে চলাফেরা করছে। এধরনের চলাফেরা ঝুঁকিপূর্ণ। সবাই যদি নিয়ম মেনে কিছুদিন সঙ্গরোধে (কোয়ারেন্টাইন) থাকে তবেই করোনার প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় স্বস্তি মিলবে।
এদিকে প্রতিদিনের মতো আজও সিভিল প্রশাসন, সেনাবাহিনী, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন করোনা রোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। একই সঙ্গে সঙ্গরোধ (কোয়ারেন্টাইন) ও সরকারি বিধি বিধান পালনে সকলকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন।