কুমিল্লা নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সব ফুটপাথ দখল কর রেখেছে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা। আর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মোড়গুলো এখন অটো-সিএনজি চালকদের দখলে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।
দ্রুত সমস্যার সমাধান না করলে ভোগান্তি আরও বাড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন শহরবাসী। সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে শতভাগ নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতে অবিলম্বে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি তাদের। আর সিটি করপোরেশন ও ট্রাফিক বিভাগ বলছে সমস্যা সমাধানে কাজ করছে তারা।
কুমিল্লায় নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক ও শাখা সড়কের ওপর অস্থায়ীভাবে গড়ে উঠেছে দোকানপাট। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের এই দখলদারিত্বের কারণে নগরবাসী ফুটপাথ ছেড়ে সড়ক দিয়ে হাঁটতে বাধ্য হচ্ছেন। এ কারণে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নগরীতে দেখা যাচ্ছে তীব্র যানজট। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। অবিলম্বে ফুটপাথ দখলমুক্ত করার পাশাপাশি যানজট লাঘবের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
নগরীর সিটি করপোরেশন সংলগ্ন নজরুল অ্যাভিনিউ, পূর্বালী চত্ত্বর, রাজগঞ্জ, রানির বাজার, পদুয়া বাজার বিশ্বরোড এলাকায় বছরের পর বছর ধরে জুতা, গেঞ্জি, লুঙ্গি, কসমেটিকসসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি করছে হকাররা।
অন্যদিকের সড়কের ফুটপাতও দখল করা হয়েছে। সেখানে কাঠের মাচা বানিয়ে দোকান বানিয়ে ফুটপাত ও সড়কের মধ্যেই চলছে পোশাকের ব্যবসা। পাশাপাশি সড়কের দুই পাশেই অটো-সিএনজি দখল নিয়েছে। এছাড়া নগরীর চকবাজার, অশোকতলা, ধর্মপুর রেলগেট, পুলিশ লাইন, মেডিকেল রোডসহ প্রধান সড়ক ও ফুটপাথ দখলে চলে গেছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ফুটপাতে এসব অবৈধ অস্থায়ী দোকান দৈনিক দুই থেকে তিনশ টাকার বিনিময়ে ভাড়া নিচ্ছে একটি রাজনৈতিক দলের সদস্যরা, এদের সাথে জড়িত জেলা ট্রাফিক পুলিশের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তাও।
কান্দিরপাড় এলাকার নগরীর বাসিন্দা আজম উদ্দিন বলেন, সড়কের ওপর ভ্যানে করে বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে সড়কে চলাচলে বিঘ্ন হচ্ছে। ফুটপাথেও হাঁটার জায়গা নেই। দোকান মালিকরা দোকান ছেড়ে সড়ক ও ফুটপাথের ওপর টেবিল বসিয়ে ব্যবসা করছে। এতে শহরে যানজট বাড়ছে। তাদের উচ্ছেদের ব্যবস্থা করা উচিত। কিন্তু আমাদের এখানে একজন আরেকজনকে দায়ী করছে। যে যার কাজ করলে শহর পরিচ্ছন্ন থাকবে।
রাজগঞ্জ একলাকার আরেক বাসিন্দা সোহেল হাওলাদার বলেন, মাঝেমধ্যে দেখি পুলিশ ও সিটি করপোরেশন এদের সরিয়ে দেয় কিন্তু এরা আবার ফুটপাথ দখল করছে। স্থায়ী ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়বে।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন বলছে, নগরীর বিভিন্ন সড়কে দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য ইতিমধ্যে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি উচ্ছেদ অভিযান চলনান রয়েছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লায় সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী মো. ছামছুল আলম বলেন, সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রধান সড়কগুলো যেসব স্থায়ী-অস্থায়ী স্থাপনা গড়ে উঠেছে সেগুলো অপসারণের জন্য ইতিমধ্যে অভিযান পরিচালনা করছি। যাতে জনসাধারণের চলাচলের পথ রুদ্ধ না হয়। এরপরেও তারা না সরলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে কুমিল্লা ট্রাফিক বিভাগের ইনচার্জ কামাল পাশা বলেন, গাড়ি পার্কিং করার জন্য নির্দিষ্ট কোনো ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। সড়কে কেউ অবৈধ দোকান বসালে তারা ব্যবস্থা নেবেন। আমরা প্রতিনিয়ত ফুটপাত থেকে দখলদারদের উচ্ছেদ করছি। সার্বিকভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে।