প্রাণঘাতী করোনার প্রভাবে থমকে গেছে বিশ্ব। লকডাউনের কারণে ঘরবন্দী বেশির ভাগ মানুষ। ভয়াবহ পরিস্থিতি এড়াতে বাংলাদেশেও চলছে অঘোষিত লকডাউন। বন্ধ রয়েছে সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হোটেল-মোটেল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
কোথাও নেই গণজমায়েতের সুযোগ। শহর-বন্দর, নগর-গ্রাম সবখানেই খুব সীমিত আকারে খোলা হচ্ছে খাবার দোকান। এমন পরিস্থিতিতে দেশের অন্যান্য জেলার মতো রংপুরেও বিপর্যস্ত বেওয়ারিশ প্রাণিকুল।
বিশেষ করে পাড়া-মহল্লা, হাট-বাজার আর পথেঘাটে থাকা কুকুরদের জন্য করোনা অভিশাপ হয়ে উঠেছে। টানা কয়েক দিন ধরে অভুক্ত এসব কুকুরগুলোর অবস্থা এখন হাড্ডিসার। রংপুর নগরীতে এমন কুকুর বিড়ালের সংখ্যাও কম নয়।
অন্যের খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ, রাস্তায় ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া খাবারের ওপর ভরসা করা অবলা প্রাণি কুকুর, বিড়ালের এখন খাদ্য সংকট চলছে। করোনা দুর্যোগে মানুষ এখন আগের চেয়ে অপচয় কমিয়ে দিয়েছে। খাবার হোটেলগুলোও বন্ধ। এতে করে বাড়ছে অভুক্ত কুকুর বিড়ালের সংখ্যা।
পথেঘাটে পড়ে থাকা এমন বেওয়ারিশ অভুক্ত কুকুরের জন্য এগিয়ে এসেছে সেবামূলক অনলাইন প্লাটফর্ম ই-সেবা ডট নেট। এই প্লাটফর্মের উদ্যোক্তা আরমান হোসেন রংপুর নগরীর বিভিন্ন এলাকাতে প্রতিদিনই কুকুরদের খাওয়াচ্ছেন।
প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকার অলিগলি ও রাস্তায় ঘুরে ঘুরে কুকুর বিড়ালকে খাবার দিচ্ছেন আরমান হোসেন। কখনো পাউরুটি, কখনো বা খিচুড়ি দিয়ে অভুক্ত কুকুরের ভুড়িভোজের ব্যবস্থা করছেন।
এব্যাপারে ই-সেবা ডট নেট এর উদ্যোক্তা আরমান হোসেন বলেন, গত সাতদিন ধরে খেয়াল করছি, কুকুরগুলো ঠিকমতো খাবার না খেতে পেরে একেবারেই জীর্ণশীর্ণ হয়ে গেছে। এদের দেখে খুব খারাপ লাগছিল। তাই বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে কুকুরগুলোকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করছি।
এদিকে এই মহতী উদ্যোগের সাথে যুক্ত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘উই ফর দেম’। সংগঠনটির ফাউন্ডার জীবন ঘোষ জানান, প্রতিদিন চাল, মুরগির মাংস, ডাল ও আলু দিয়ে তৈরি করা খিচুড়ি রংপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে অভুক্ত কুকুর বিড়ালের বিলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। করোনা দুর্যোগে শুধু পশুপাখির নয়, মানুষের জন্যেও এই সংগঠনটি কাজ করছেন বলেও জানান এই তরুণ স্বেচ্ছাসেবী।