জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (অব.) আব্দুল মাজেদ কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছেন।
বুধবার (৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বার্তা২৪.কমকে এ খবর নিশ্চিত করেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরানীগঞ্জ) জেলার মাহবুবুল ইসলাম।
এর আগে আব্দুল মাজেদের মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর করার জন্য মৃত্যুদণ্ড পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম বলেন, মৃত্যুর পরোয়ানা পত্রটি কারাগারে এসে পৌঁছায় বিকেলে। তখনই সেটা মাজেদকে পড়ে শোনানো হয়। মাজেদ তখন রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে আমাদের মাধ্যমেই প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমি শুনেছি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছেন আব্দুল মাজেদ। তবে এখনো আবেদনটি মন্ত্রণালয়ে এসে পৌঁছায়নি।
বুধবার বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলাল চৌধুরীর আদালতে আব্দুল মাজেদের মৃত্যু পরোয়ানা চেয়ে আবেদন করেছিলেন। শুনানি শেষে আদালত মাজেদের ‘মৃত্যুদণ্ড পরোয়ানা’ জারি করেন।
জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলাল চৌধুরী ছুটিতে থাকায় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার মৃত্যু পরোয়ানা শুনানির জন্য হাইকোর্ট তার ৮ এপ্রিলের ছুটি বাতিল করেন।
প্রথমে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আব্দুল মাজেদকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হয়। আবেদনটি মঞ্জুর হওয়ার তাকে আদালতে হাজির করার জন্য প্রডাকশন ওয়ারেন্ট জারির আবেদন করা হয়। প্রডাকশন ওয়ারেন্ট জারির আবেদন মঞ্জুর হলে আব্দুল মাজেদকে ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয়।
মোশাররফ হোসেন কাজল বার্তা২৪.কমকে জানিয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (অব.) আব্দুল মাজেদের মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর করার জন্য আমরা আবেদন করেছি। বিচারক শুনানি গ্রহণ করেছেন।
গত মঙ্গলবার বার্তা২৪.কমকে এই আইনজীবী বলেছিলেন, মাজেদ বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তার অনুপস্থিতিতে হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের রায় চূড়ান্ত হয়েছে। ১৯৯৮ সালের রায় ঘোষিত হওয়ার পর ২২ বছর পলাতক ছিলেন। এখন আর তার আপিল করার কোন সুযোগ নাই।
তবে তাদের মতের সাথে ভিন্নতা প্রকাশ করেন সুপ্রিমকোর্ট বারের সাবেক সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন্। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, কোন আসামিকে ধরে নিয়েই ফাঁসি কাষ্ঠে ঝোলানো যায় না। আপিলের সুযোগ পাওয়া একজন আসামির অধিকার।
সময় তামাদি হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আসামি উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে তামাদি সময় মওকুফের আবেদন করতে পারবেন। আবেদন মওকুফ করা না করার বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার। এরপর রিভিউ আছে। সর্বশেষ রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়টি আছে। আসামিকে এ সুযোগ দিতে হবে।
বঙ্গবন্ধু হত্যার ৪৫ বছর ও রায়ের ২২ বছর পর গত মঙ্গলবার মাজেদকে ঢাকার মিরপুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর তাকে ফৌজদারী কার্যবিধির ৫২ ধারায় ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হলে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
আরও পড়ুন:
মাজেদের মৃত্যুদণ্ড পরোয়ানা জারি