ছোট কারখানা পাচ্ছে না সহায়তা, বেতনের শঙ্কায় শ্রমিকরা

, জাতীয়

মাহিদুল মাহিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা) | 2023-08-31 16:19:29

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সারা পৃথিবীর মত বাংলাদেশকেও করেছে স্থবির। আর এই ভাইরাসের হাত থেকে জাতিকে বাঁচাতে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সব ধরনের প্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন ও দোকানপাট। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে পোশাক কারখানাও। এতে করে সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে পড়েছে ছোট কারখানাগুলো। অনেক শ্রমিকই পাচ্ছে না বেতন।

দেশে প্রায় ছোট বড় ১০ হাজারের বেশি পোশাক কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে বিজিএমইএ'র সদস্যভুক্ত প্রায় ৪ হাজার ৩৭৫ আর বিকেএমইএ'র সদস্যভুক্ত প্রায় ২ হাজার ২৯২ কারখানা। বাকি প্রায় ৪ হাজার কারখানা বলা যায় পিতৃশূন্য। এই ৪ হাজার কারখানায় প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ শ্রমিক কাজ করেন। এসব কারখানার ক্রয়াদেশ চুক্তির (সাব-কন্ডাক্ট) ও ছোট ছোট এলসি ভিত্তিক হয়ে থাকে। তাই কোনরকম সহযোগিতা ছাড়া শ্রমিকদের বেতন পরিশোধে রয়েছে শঙ্কা।

মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের কারণে রফতানিমুখী পোশাক কারখানা খাতে ৫ হাজার কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই প্রণোদনা বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ এর সদস্যভুক্ত কারখানাগুলোই পাবে বলে ধারণা করছেন ছোট কারখানা মালিকরা। এর কিছু অংশ যদি ছোট কারখানাগুলোর জন্য বরাদ্দ হতো তাহলে শ্রমিকদের বেতন প্রদান করতে পারতেন বলে জানান এসব কারখানা মালিকরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাভারের একটি ছোট কারখানার মালিক বলেন, 'আমার কারখানায় প্রায় ৪ শতাধিক শ্রমিক রয়েছে। সাব ক্রয়াদেশের কাজ করে থাকে তারা। আমরা বড় কারখানার পরিপূরক হিসাবে কাজ করি। তাই সদস্য না হলেও আমাদের দিকে দেখা উচিত। আমাদের জন্য নয়, শ্রমিকদের দিকে তাকিয়ে হলেও এই সংকটে অবস্থায় প্রণোদনা থেকে আমাদের শ্রমিকদের বঞ্চিত করা উচিত নয়'।

অপর কারখানা মালিক আনিছ বার্তা২৪.কমকে বলেন, এর আগেও আমরা দেখেছি সরকার রফতানিমুখী পোশাক কারখানায় আর্থিক প্রণোদনা এসেছে, তা এই ছোট ছোট কারখানাগুলো পর্যন্ত পৌঁছায়নি। ব্যাংকগুলো বড় কারখানাগুলোকে যে সুযোগ সুবিধা দেন সেরকম সুবিধাও আমাদের এই ছোট ছোট কারখানাগুলোকে দেয়না। গার্মেন্টস শিল্পের খারাপ পরিস্থিতিতে সব থেকে বেশি ঝুঁকিতে থাকে এই ছোট কারখানাগুলো। আশা করি এই সংকটময় পরিস্থিতিতে আমাদের কথাও ভাববেন সংশ্লিষ্টরা।

আশুলিয়ায় এরকম একটি কারখানায় কাজ করেন শেফালি। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি ছোট কারখানায় কাজ করি। এমনিতেই কারখানা মালিক ঠিকঠাক বেতন দিতে পারতো না। এখন তো কারখানা বন্ধ। আমরা বেতন পাবো কি না টেনশনে আছি। আমার মনে হয় আমরাই বেশি বিপদে পড়ে যাবো।

এব্যাপারে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু বার্তা২৪.কমকে বলেন, বর্তমান সময়ে সরকারের উচিৎ এই ধরনের কারখানাগুলোর তালিকা করে তাদের কাছ থেকে শ্রমিকদের তথ্য নিয়ে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানো। তাহলেই এসব ছোট কারখানা বাঁচবে, বাঁচবে শ্রমিক ও দিন ভিত্তিক কর্মচারীরা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর