ঢেঁড়সের কেজি ১০, তবুও নেই ক্রেতা
করোনা মহামারির কারণে নাটোরে ঢেঁড়সের ক্রেতা নেই। ফলে স্থানীয় বাজারগুলোতে মণপ্রতি ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে ঢেঁড়স। অথচ এক মাস আগেও ঢেঁড়স পাইকারি বিক্রি হয়েছে মণপ্রতি এক হাজার ৪০০ টাকা।
নাটোর সদর উপজেলার লক্ষিপুর-খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নের চৌরি এলাকায় বিপুল পরিমাণে ঢেঁউস উৎপাদিত হয়। চাহিদা থাকায় স্থানীয় চৌরি ও দত্তপাড়া বাজার থেকে ট্রাকভর্তি ঢেঁড়স কিনে রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যেতেন পাইকাররা। কিন্তু গত এক মাস যাবৎ ঢেঁড়স কিনতে আসছেন না কোনো পাইকার বা মহাজন। এতে উৎপাদিত ঢেঁড়স লোকসান দিয়ে স্থানীয় গ্রামীণ বাজারগুলোতে বিক্রি করছেন চাষিরা।
সম্প্রতি চৌরি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় বিদ্যালয় মাঠে উৎপাদিত সবজির পসরা বসিয়েছেন চাষিরা। অন্যান্য সবজি বিক্রি হলেও ঢেঁড়সের ক্রেতা নেই। তবে শহরের বাজারগুলোতে ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি দরে।
চাষিরা জানান, তাদের উৎপাদিত ঢেঁড়সের মূল ক্রেতা বাইরের। বছরের অন্য সময় সরাসরি মহাজনদের কাছে বিক্রি করলেও এখন মহাজনরা আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। তাই বাধ্য হয়ে কম দামে স্থানীয় বাজারগুলোতে ঢেঁড়স বিক্রি করতে হচ্ছে। শহরের বাজারগুলোতে কিছুটা দাম থাকলেও বিক্রি কম হওয়ায় পরিবহন খরচও উঠবে না।
ঢেঁড়স চাষি আলাউদ্দীন জানান, ভালো দামের আশায় ১৫ কাঠা জমিতে ঢেঁড়স চাষ করেছিলাম। এখন এলাকার বাজারেই দাম নেই।
অপর চাষি মতিউর ও শহীদুল জানান, তারা যথাক্রমে ৮ ও ১০ কাঠা জমিতে ঢেঁড়স চাষ করেছিলেন। এখন মণপ্রতি দাম ৪০০ টাকায় নেমে এসেছে। কেজিপ্রতি ১০ টাকা বিক্রি করা হলেও দিনে এক-দেড় মণের বেশি বিক্রি হয় না। অথচ প্রতিদিন স্থানীয় বাজারগুলোতে ১০ থেকে ১৫ মণ ঢেঁড়স ওঠে।
চাষি আব্দুস সাত্তার বলেন, আমরা এখন ঢেঁড়সের দাম পাচ্ছি না। ঢেঁড়স রাখতে পারলে পরে বিক্রি করা যেত। রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই। একটি হিমাগার না থাকায় আমাদের প্রতি মৌসুমে লোকসানের মুখ দেখতে হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার বলেন, নাটোর জেলায় মৌসুমী শাক-সবজি সংরক্ষণে একটি হিমাগার প্রতিষ্ঠার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আমরা অবহিত করেছি।
জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ বলেন, বর্তমান সংকটকালীন সময়ে যে কোনো কৃষিপণ্য, কৃষি উপকরণ পরিবহনের ব্যাপারে প্রশাসন সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। মহাজনরা আসতে চাইলে ঢেঁড়সসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য পরিবহনে সহযোগিতা করা হবে।