ঢাকা: কয়েকদিন পরেই সারাদেশে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হবে ঈদ-উল-আজহা। এই ঈদের অন্যতম অনুসঙ্গ হলো পশু কোরবানি দেওয়া। তাই ঈদের ১০-১৫ দিন আগেই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের স্থায়ী ও অস্থায়ীপশুর হাটগুলোতে শুরু হয়ে যায় প্রস্তুতি। নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে হাট সাজানোর প্রস্তুতি নেন ইজারাদাররা।
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে হাট সাজানোর প্রস্তুতি দেখা গেছে রাজধানীর সবচেয়ে বড় ও একমাত্র স্থায়ী পশুর হাট গাবতলীতেও। দিনে রাত কাজ করে হাট প্রস্তুতির কাজে ব্যস্ত কর্তৃপক্ষ। কারণ হাতে মাত্র এক সপ্তাহ সময়। এর পরই হাটে কোরবানির পশু কেনাকাটা শুরু হয়ে যাবে। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের আগে কাজ শেষ করতে ব্যস্ত শ্রমিকরাও। শনিবার (১১আগস্ট) রাজধানীর গাবতলী পশুর হাট ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, যেসব জায়গায় হাট জমবে সেসব জায়গায় চলছে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ। এছাড়া এসব জায়গায় বাঁশ ও ত্রিপাল দিয়ে তৈরি হচ্ছে বিশাল অস্থায়ী ছাউনি। এদিকে হাটের মূল ফটকের সামনে তৈরি করা হচ্ছে বিশালগেট। সবেমাত্র বাঁশ দিয়ে গেটের আকৃতি নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। তবে হাটের ভেতরের রাস্তা পরিস্কার এবং কোথাও কোথাও অপ্রয়োজনীয় কাদামাটি অপসারণ করার চিত্রও চোখে পড়লো।
একই সঙ্গে গণশৌচাগারের আশপাশে মাটি ফেলে তা ব্যবহার উপযোগী করছে কর্তৃপক্ষ। তবে এখনো ইজারা কাউন্টার, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণকক্ষ এবং ওয়াচ টাওয়ার তৈরি হয়নি।
হাটের বাকি কাজ সম্পন্নের বিষয়ে হাট কর্তৃপক্ষ জানায়, মূলত ঈদের ৩-৪ দিন আগে হাটের মূল কার্যক্রম শুরু হয়। তাই তাদের হাতে পর্যাপ্ত সময় আছে। এ সময়ের মধ্যে দ্রুত হাট প্রস্তুতির কাজ শেষ করা হবে।
তারা আরও জানান, এ হাটের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন। তাই প্রতিবারের মতো এবারও পুরো হাট এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে, হাটে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর পাশাপাশি এক হাজার সেচ্ছাসেবী নিয়োজিত থাকবে এবং হাটের চারপাশে কড়া নজর রাখতে নির্মাণ করা হচ্ছে৩৫-৪০টি ওয়াচ টাওয়ার।
এ বিষয়ে গাবতলী পশুর হাটের পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. সানোয়ার বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘প্রতিবারের মতো এবারও প্রস্তুতি নিচ্ছি। কোরবানির হাট নিয়ে কোনো বিষয়েই গাফিলতি করার সুযোগ নেই। হাটে ব্যবসায়ীদের টাকা জমা দেওয়ার ভোগান্তি কমাতে ১০-১১ টি হাসিল কাউন্টার তৈরি করা হবে। এছাড়াও হাটে এক হাজার সেচ্ছাসেবী কাজ করবেন।’
আসন্ন ঈদে পশুর দরদাম সম্পর্কে হাটের স্থায়ী ব্যবসায়ীরা জানান, এ বছর হাটে পশুর পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকবে বলে আশাকরা যাচ্ছে। ফলে দামও স্বাভাবিক থাকবে। তবে এখনও হাটে পশু আনা শুরু হয়নি। কারণ রাজধানীবাসীর পশু রাখার জায়গা নেই। তারা এক বা দুইদিন আগে পশু কিনতে আসে। অনেকে ঈদের দিন সকালে পশু কিনে নিয়ে কোরবানি দেন। এ ছাড়াবর্ষার মৌসুমে পশু রাখাও বেশ ঝামেলার। তাই আগে থেকে হাটে পশু এনে অযথা খরচ বাড়াতে চান না ব্যবসায়ীরা। তবে আরও ৫/৬ দিনে পর থেকে হাটে পশু আনা শুরু হবে।