৬০ শতাংশ বেতনে বাসাভাড়া নিয়ে শঙ্কিত পোশাক শ্রমিকরা

, জাতীয়

মাহিদুল মাহিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা) | 2023-08-25 03:53:57

করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) নাস্তানাবুদ পুরো বিশ্ব। এই ভাইরাসের অদৃশ্য দানবী শক্তিতে স্থবির বাংলাদেশও। এর সংক্রমণ থেকে দেশের মানুষকে বাঁচাতে দফায় দফায় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তবে দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে সীমিত আকারে খোলা হয়েছে পোশাক কারখানা। কিন্তু শ্রমিকের বেতন মোট বেতনের ৬০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে বাসাভাড়া নিয়ে শঙ্কিত পোশাক শ্রমিকরা।

গত ২৬ এপ্রিল থেকে সীমিত আকারে খোলা হয়েছে পোশাক কারখানা। ৩০ শতাংশ পোশাক শ্রমিকদের নিয়ে এসব কারখানা চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়। পরে ২৮ এপ্রিল বাকি শ্রমিকদের মোট বেতনের ৬০ শতাংশ বেতন নির্ধারণ করা হয়। এতেই হতাশা প্রকাশ করেছেন শ্রমিকরা। ৬০ শতাংশ বেতনে খাওয়া, দোকান বিল ও বাসাভাড়া দিয়ে চলতে হিমশিম খেতে হবে বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা। তাই বাসাভাড়া কমানোর দাবি জানান তারা।

সোমবার (৪ মে) সকালে সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন কলোনির শ্রমিকরা এ শঙ্কার কথা জানান।

শ্রমিকরা জানান, সাভার ও আশুলিয়ায় একটা কক্ষের ভাড়া নূন্যতম ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। যা মোট বেতনের ৬০ শতাংশের কিছু কম। ওই বেতনে বাসাভাড়া দিয়ে খেয়ে বেঁচে থাকা সত্যিই কষ্টদায়ক।

আশুলিয়ার ঘোষবাগ এলাকার একটি শ্রমিক কলোনিতে থাকেন শিরিনা নামে এক পোশাক শ্রমিক। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি ৩ হাজার টাকা ভাড়ায় একটি কক্ষ নিয়ে ১ ছেলে ও ১ মেয়ে নিয়ে থাকি। আমার স্বামী মারা যাওয়ায় সন্তানদের লেখাপড়াসহ সব খরচই আমার বহন করতে হয়। শুনেছি এখন ৬০ শতাংশ বেতন দেবে কারখানা কর্তৃপক্ষ। ৬০ শতাংশ হিসাবে আমি ৪ হাজার ২০০ টাকা বেতন পাবো। বাসাভাড়া দিলে আমি খাবো কী? সন্তানদের খাওয়াবো কী? তাই বাসাভাড়া কমানোর জোর দাবি জানাচ্ছি।’

আরেক শ্রমিক রাহেলা বলেন, ‘বাসাভাড়া না কমালে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আগেই মারা যাবো।’

ওই কলোনির এক বাড়িওয়ালা মেহেদী বলেন, ‘আমি ঋণ করে ও নির্মাণ সামগ্রী বাকিতে কিনে বাড়ি নির্মাণ করেছি। বাসাভাড়া দিয়েই আমরা চলি। ঠিকমতো ভাড়া না পেলে আমি বিপদে পড়ে যাবো। তবে আমিও চাই শ্রমিকরা যাতে বিপদে না পড়ে। কিন্তু আমি নিরুপায়।’

এ ব্যাপারে সাভার-আশুলিয়া ভাড়াটিয়া পরিষদের সভাপতি ও শ্রমিক নেতা সরোয়ার হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘শ্রমিকদের বর্তমান বাসাভাড়া মোট বেতনের প্রায় ৪২ শতাংশ। তাই বাসাভাড়া না কমালে শ্রমিকরা বিপদে পড়বে। এ কারণে ভর্তুকি দিয়ে হলেও বাসাভাড়া কমানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর