ঢাকা: আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানিকৃত পশু থেকে প্রায় ৪০ লাখ চামড়া সংগ্রহের আশা করা হচ্ছে। তবে এর মধ্যে ২০ শতাংশ অর্থাৎ ৮ লাখ চামড়ার মান নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ একদিকে কমেছে চামড়ার দাম অন্যদিকে বেড়েছে লবন ও চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে প্রয়োজনীয় কেমিক্যালের দাম।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন থেকে জানা যায়, আসন্ন কোরবানির ঈদে ৪০ লাখ থেকে ৪৫ লাখ পশুর চামড়া সংগ্রহ করা সম্ভব হবে। কিন্তু এর মধ্যে ২০ শতাংশ চামড়ার মান নষ্ট হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন চামড়ার খুচরা ব্যবসায়ীরা। সে হিসাবে প্রায় ৮ লাখ চামড়া মান ধরে রাখা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।
হাজারীবাগ এলাকার মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা কোরবানির ঈদ এলে বিভিন্ন এলাকা থেকে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করে থাকি। কিন্তু যতোই দিন যাচ্ছে চামড়ার দাম কমছে। চলতি বছর গরুর চামড়ার প্রতি বর্গফুটের সর্বনিম্ন মূল্য নির্ধারণ হয়েছে ৪৫ টাকা আর সর্বোচ্চ ৫০ টাকা। অথচ ২০১৩ সালে গরুর চামড়ার প্রতি বর্গফুটে সবনিম্ন মূল্য ছিল ৮৫ টাকা। অন্যদিকে লবনের দাম কোরবানি ঈদ আসায় বেড়েছে বস্তা প্রতি ৩শ টাকা থেকে ৪শ টাকা। চামড়া সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় কেমিক্যাল যেমন সোডিয়াম, অ্যামোনিয়াম, সালফিউরিক এসিড, চুনের দামও বেড়েছে উল্লেখযোগ্যহারে। আমাদের তৃণমূল পর্যায় থেকে ৩০ টাকার কমে প্রতি বর্গফুট চামড়া সংগ্রহ করতে পারবো না। বাকি ২০ টাকায় লবনই দিবো কি আর কেমিক্যালই কি দিবো। আর লবন ও কেমিক্যাল পরিমাণ মতো না দিলে তো চামড়ার মান ঠিক থাকবে না। ফলে চামড়াতো নষ্ট হবেই।
তবে শুধু যে লবন ও কেমিক্যালের দাম বাড়ার কারণে চামড়ার মান নষ্ট হচ্ছে তা মানতে নারাজ বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হাজী দেলোয়ার হোসেন।
বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, এ বছর সংগৃহীত চামড়ার ২০ শতাংশের যে মান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এটি সত্য। এর একটি কারণ লবনের দাম বৃদ্ধি এটি ঠিক। কিন্তু অনেক সময়ই তৃণমূল পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা চামড়া প্রকিয়াজাতকরণের সঠিক নিয়ম অনুসরণ করতে পারেন না। ফলে চামড়ার মান ধরে রাখা কঠিন হয়ে যায়।
অন্যদিকে চামড়ার মান নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে বিপাকে পড়তে হয় ট্যানারি মালিকদের বলে জানান বাংলাদেশ ট্যানার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, চামড়া সংগ্রহের পর সেগুলো আসে শেষ পর্যায়ে ট্যানারিতে। এবার ৪০ লাখ থেকে ৪৫ লাখ চামড়া সংগ্রহ হবে বলে আশা করছি। প্রতিবছরই কিছু চামড়া মান নষ্ট হয়ই। সেসব নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় আমাদের। সেসব না আমাদের কোনো কাজে লাগে না। আবার তা আমরা ফেলেও দিতে পারি না। উভয় সংকটে পড়তে হয় ট্যানারী মালিকদের।